প্রয়াত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেনকে (রাজীব মীর) বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, এ মর্মে জারি করা রুলের শুনানি শুরু হয়েছে।

রাজীব মীরের স্ত্রী সুমনা খানকে রিটে পক্ষভুক্ত করে বুধবার (২৪ নভেম্বর) বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম ও বিচারপতি মো. ইকবাল কবীরের হাইকোর্ট বেঞ্চে রুল শুনানি শুরু হয়। পরবর্তী শুনানির জন্য আগামীকাল ধার্য করেছেন আদালত।

আদালতে সুমনা খানের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী ড. শাহদীন মালিক। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মো. নাসিম ইসলাম রাজু ও সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নজরুল ইসলাম।

সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল নাসিম ইসলাম রাজু বলেন, অধ্যাপক মীর মোশারেফ হোসেন (রাজীব মীর) মারা যাওয়ার পর ২০১৯ সালের ২৯ অক্টোবর তার স্ত্রী সুমনা খান রিটে পক্ষভুক্ত হন। 

ড. শাহদীন মালিক ঢাকা পোস্টকে বলেন, রুল শুনানি শেষে হাইকোর্ট যদি রাজীব মীরকে বরখাস্তের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন, রুলটি অ্যাবসুলুট (যথাযথ) করেন, সেক্ষেত্রে স্ত্রী হিসেবে সুমনা খান ও তার সন্তান স্বামীর চাকরির সব আর্থিক সুযোগ সুবিধা পাবেন। এছাড়া প্রয়াত শিক্ষক রাজীবের বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ আদালতে মিথ্যা প্রমাণিত হলে তার পরিবারের জন্য এটা সন্তুষ্টির কারণ হবে। তিনি বলেন, আগামীকাল (বৃহস্পতিবার) জবির পক্ষে অ্যাডভোকেট ইউসুফ হোসেন হুমায়ন শুনানি করবেন।

২০১৮ সালের ৩০ জুন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেনকে (রাজীব মীর) বরখাস্তের সিদ্ধান্ত কেন বেআইনি ও অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। রুলে এই শিক্ষককে কেন জ্যেষ্ঠতা ও বকেয়া সব বেতনাদি সুবিধাসহ স্বপদে পুনর্বহাল করা হবে না, তাও জানতে চাওয়া হয়।

শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের সচিব, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য এবং রেজিস্ট্রারকে এ রুলের জবাব দিতে বলা হয়।

২০১৮ সালের ২৮ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিটটি দায়ের করেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের তৎকালীন (বর্তমানে প্রয়াত) সহযোগী অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেন।  

রিটে  বলা হয়, অধ্যাপক মীর মোশাররফ হোসেনের বিরুদ্ধে গঠিত তদন্ত কমিটির তদন্ত রিপোর্টের কোনো কপি তাকে সরবরাহ করা হয়নি। এর ফলে তার বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগের সাক্ষ্য প্রমাণ সম্পর্কে তাকে পূর্ণাঙ্গভাবে অবহিত না করেই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়, যা বেআইনি ও অবৈধ। 

একাধিক ছাত্রীকে যৌন হয়রানির অভিযোগে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক মীর মোশাররফ হোসেনকে ২০১৭ সালের ১০ জুলাই স্থায়ীভাবে চাকুরিচ্যুত করা হয়। তিনটি তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে দোষী সাব্যস্ত হবার পর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৪তম সিন্ডিকেট সভা তার বিরুদ্ধে এ সিদ্ধান্ত নেয়।

২০১৮ সালের ২১ জুলাই রাজীব মীর (মীর মোশাররফ হোসেন) মারা যান। চেন্নাইয়ে চিকিৎসারত অবস্থায় তিনি মারা যান। 

এমএইচডি/এসএম