দেশের পারিবারিক আদালতের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ক্ষমতা অর্পণ করা যাবে না। অর্থাৎ পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেওয়া যাবে না বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। এছাড়া পারিবারিক আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিভিশন করার ক্ষেত্রে দেওয়ানী কার্যবিধির ১১৫ ধারা প্রয়োগ বাধা হবে না বলেও রায়ে বলা হয়।

মঙ্গলবার (১৬ নভেম্বর) বিচারপতি এ কে এম আবদুল হাকিম, বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে শুনানিতে ছিলেন ব্যারিস্টার মো. সাইদুল আলম খান। বিবাদী পক্ষে ছিলেন আইনজীবী এম খালেদ আহমেদ। 

গত ২ ফেব্রুয়ারি দেশের পারিবারিক আদালতের মামলা পরিচালনার ক্ষেত্রে মূল ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে অন্যকে ক্ষমতা অর্পণ করার (পাওয়ার অব অ্যাটর্নি) আইনি মতামত জানতে চার বিশিষ্ট আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি (আদালতের বন্ধু) নিয়োগ দেন হাইকোর্ট।

তারা হলেন- জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আই ফারুকী, এ এফ হাসান আরিফ, কামাল-উল আলম ও প্রবীর নিয়োগী।

ব্যারিস্টার মো. সাইদুল আলম খান বলেন, ‘এ মামলার বাদী এক নারী। তার আমেরিকা প্রবাসী সাবেক স্বামীর বিরুদ্ধে দেনমোহর ও সন্তানের ভরণপোষণের দাবিতে মামলা করেন। সে মামলায় বিবাদী তার পক্ষে মামলা লড়তে এক আত্মীয়কে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি দেন। কিন্তু ফ্যামিলি কোর্ট অর্ডিন্যান্স-১৯৮৫ অনুযায়ী পারিবারিক মামলায় পাওয়ার অব অ্যাটর্নি নেওয়ার বিধান নেই বলে সিলেটের পারিবারিক আদালত এ মামলায় বিবাদীর পক্ষে পাওয়ার অব অ্যাটর্নি রাখার বিষয়টি গ্রহণ না করে আদেশ দেন।

এ সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে বিবাদী আপিল করলে সিলেটের জেলা জজ আদালত সে আপিল খারিজ করেন। এরপর হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন আমেরিকা প্রবাসী বিবাদী।

বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দুস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চে ওই রিভিশন আবেদনের শুনানি শুরু হয়। শুনানিতে পারিবারিক আদালতের মামলায় দেওয়ানী কার্যবিধির ১০ ও ১১ ধারার বাইরে অন্য কোনো ধারা প্রযোজ্য হবে কি না সে বিষয়ে হাইকোর্টের সামনে ভিন্ন ভিন্ন রায় পরিলক্ষিত হয়। একপর্যায়ে হাইকোর্ট বেঞ্চ এই রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য বৃহত্তর বেঞ্চ গঠন করতে প্রধান বিচারপতির কাছে পাঠান।

পরে প্রধান বিচারপতি রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য তিন বিচারপতির সমন্বয়ে একটি বৃহত্তর হাইকোর্ট বেঞ্চ গঠন করে দেন। বৃহত্তর বেঞ্চে রিভিশন আবেদনটি শুনানির জন্য এলে হাইকোর্ট চার জ্যেষ্ঠ আইনজীবীকে অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেন। অ্যামিকাস কিউরিদের মতামত নিয়ে আদালত আজ (মঙ্গলবার) এ রায় দিলেন।

এমএইচডি/এসএম/জেএস