মডেল ও অভিনেত্রী সৈয়দা তানিয়া মাহবুব তিন্নি হত্যা মামলার রায় ঘোষণার তারিখ আবারও পেছাল। মামলাটির পুনরায় সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছেন আদালত। 

সোমবার (১৫ নভেম্বর) মামলাটির রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু এ দিন তিন্নির বাবা ও চাচার সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য রাষ্ট্রপক্ষ আদালতে আবেদন করে। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা জজ আদালতের বিচারক কেশব রায় চৌধুরী সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য আগামী ৫ জানুয়ারি দিন ধার্য করেন।

এর আগে দুপুর ১২টায় বিচারক এজলাসে আসেন। এরপরেই রাষ্ট্রপক্ষের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর ভোলা নাথ দত্ত বাদী তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুব করিমের আংশিক সাক্ষ্যগ্রহণ ও চাচা সৈয়দ রেজাউল করিমের সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য পুনরায় আবেদন করেন। এরপর আদালত তিন্নির বাবা সৈয়দ মাহবুব করিম জিজ্ঞেস করেন আপনি এতদিন সাক্ষ্য দিতে আসেননি কেন? আপনার জন্য আদালত থেকে অনেক প্রসেস পাঠানো হয়েছে। তখন তিন্নির বাবা জানান, তিনি কিছুই পাননি। এরপর আদালত বলেন, আপনি এ মামলার গুরুত্বপূর্ণ সাক্ষী। আপনি কবে সাক্ষ্য দিতে পারবেন? তখন তিন্নির বাবা বলেন আগামী মাসে পারব না। তখন বিচারক আগামী ৫ জানুয়ারি সাক্ষ্যগ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেন।

গত ২৬ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু ওই দিন রায় ঘোষণা করেননি আদালত। রায় ঘোষণার জন্য আজকের (১৫ নভেম্বর) দিন ধার্য করা হয়েছিল। 

মামলার নথি থেকে জানা যায়, কেরানীগঞ্জের বুড়িগঙ্গা নদীর ১ নম্বর চীন মৈত্রী সেতুর ১১ নম্বর পিলারের পাশে ২০০২ সালের ১০ নভেম্বর রাতে মডেল তিন্নির মরদেহ পাওয়া যায়। পর দিন অজ্ঞাতনামা আসামির বিরুদ্ধে মামলা করেন কেরানীগঞ্জ থানার তৎকালীন সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মো. সফি উদ্দিন। 

এ মামলার প্রথম তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন ওই থানার তৎকালীন উপ-পরিদর্শক (এসআই) মো. কাইয়ুম আলী সরদার। এরপর নিহত তিন্নির মরদেহের ছবি পত্রিকায় ছাপা হলে সুজন নামে নিহতের এক আত্মীয় তা শনাক্ত করেন। পরে মামলাটি চাঞ্চল্যকর মামলা হিসেবে ২০০২ সালের ২৪ নভেম্বর তদন্ত ভার সিআইডিতে ন্যস্ত হয়। তদন্তের দায়িত্ব পান তৎকালীন সিআইডির পরিদর্শক ফজলুর রহমান।

এরপর মামলার তদন্তের দায়িত্ব পান সিআইডির পরিদর্শক সুজাউল হক, সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) গোলাম মোস্তফা, এএসপি আরমান আলী, এএসপি কমল কৃষ্ণ ভরদ্বাজ ও এএসপি মোজাম্মেল হক। সর্বশেষ তদন্ত কর্মকর্তা মোজাম্মেল হকই আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। তিন্নি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রে ৪১ জনকে সাক্ষী করা হয়। এছাড়াও এই মামলায় ২২টি আলামত জব্দ করা হয়।

তদন্তে প্রাথমিকভাবে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য গোলাম ফারুক অভি অভিযুক্ত হলেও পুলিশ তাকে ধরতে পারেনি। অভির অনুপস্থিতিতেই ২০১০ সালের ১৪ জুলাই ঢাকার সপ্তম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তিন্নি হত্যা ও মরদেহ গুম সংক্রান্ত মামলায় অভির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।

টিএইচ/এসকেডি