দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বলেছেন, আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নয়। অপরাধী যত ক্ষমতাধরই হোক না কেন, যদি অপরাধ প্রমাণিত হয় তাহলে তাকে সাজা ভোগ করতে হবে।

মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক শেখ নাজমুল আলমের আদালত ঋণ জালিয়াতি ও অর্থ আত্মসাতের মামলায় সাবেক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার (এসকে) সিনহাকে ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। রায় ঘোষণার পর সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন দুদক আইনজীবী।

তিনি আরও বলেন, আজ আদালত এসকে সিনহাকে চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে পৃথক দুটি ধারা ১১ বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন। একই সঙ্গে আরও আট জন আসামিকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দিয়েছেন। এ মামলায় দুই জনকে খালাস দেওয়া হয়েছে। খালাসপ্রাপ্তরা আদালতে স্বীকার করেন যে তাদের কাছ থেকে এসকে সিনহা কিছু কাগজপত্রে স্বাক্ষর নিয়েছেন। কেন স্বাক্ষর নিয়েছে তারা এ বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে আদালতে স্বীকার করেন।

দুদক আইনজীবী আরও বলেন, এসকে সিনহা দুজন ব্যক্তিকে দিয়ে যেই দিন অ্যাকাউন্ট খোলেন তারপরের দিন কোনো ডকুমেন্ট পর্যালোচনা না করেই চার কোটি টাকা ঋণ দেওয়া হয়।

আইনজীবী মীর আহমেদ আলী সালাম বলেন, বিচারক রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, প্রধান বিচারপতি এসকে সিনহা প্রধান বিচারপতি থাকা অবস্থায় যে কাজগুলো করেছেন সেগুলো রাষ্ট্রপক্ষ সম্পূর্ণভাবে প্রমাণ করেছে বিধায় তাকে এ কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।

গত ২১ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক রায় প্রস্তুত করতে না পারায় ৯ নভেম্বর (মঙ্গলবার) দিন নির্ধারণ করা হয়। 

তার আগে গত ৫ অক্টোবর রায় ঘোষণার দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বিচারক অসুস্থ থাকায় রায় ঘোষণার তারিখ পেছানো হয়।

ফারমার্স ব্যাংক থেকে চার কোটি টাকা ব্যক্তিগত ব্যাংক অ্যাকাউন্টে স্থানান্তর ও আত্মসাৎ করার অভিযোগে ২০১৯ সালের ১০ জুলাই দুদকের পরিচালক সৈয়দ ইকবাল হোসেন বাদী হয়ে কমিশনের জেলা সমন্বিত কার্যালয় ঢাকা-১ এ এসকে সিনহাসহ ১১ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।

একই বছরের ডিসেম্বরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুদক পরিচালক বেনজীর আহমেদ চার্জশিট দেন। ২০২০ সালের ৫ জানুয়ারি ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ চার্জশিট গ্রহণ করেন। ২০২০ সালের ১৩ আগস্ট আদালত অভিযোগ গঠন করেন।

মামলার এজাহারে বলা হয়, আসামিরা প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে ফারমার্স ব্যাংকের গুলশান শাখা থেকে ‘অস্বাভাবিক দ্রুততার’ সঙ্গে চার কোটি টাকা ভুয়া ঋণ তৈরি করে তা একইদিনে পে-অর্ডারের মাধ্যমে আসামি এসকে সিনহার ব্যক্তিগত হিসাবে স্থানান্তর করেন। পরে এসকে সিনহা নগদ, চেক ও পে-অর্ডারের মাধ্যমে অন্য অ্যাকাউন্টে টাকা সরিয়ে অর্থ আত্মসাৎ করেন, যা দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ও মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইন অনুযায়ী শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

টিএইচ/এসএসএইচ