ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের বিরুদ্ধে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা পৃথক তিন মামলায় অভিযোগ গঠন করেছেন আদালত। এ অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে বিচার শুরু হলো।

সোমবার (৮ নভেম্বর) ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক আস সামছ জগলুল হোসেন এ আদেশ দেন।

গত ১৪ মার্চ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোহাম্মদ রাসেল মোল্লা ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ চার্জশিট দাখিল করেন।

তদন্ত কর্মকর্তা অভিযোগপত্রে উল্লেখ করেন, ‘যুব মহিলা লীগের নরসিংদী জেলার সাধারণ সম্পাদক শামিমা নূর পাপিয়া বিভিন্ন অপরাধের সঙ্গে জড়িত হলে তাকে গ্রেফতার করা হয়। বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগ বিষয়টি জানার পর সঙ্গে সঙ্গে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করে। এরপর আসামি শফিকুল ইসলাম কাজল তার ফেসবুক আইডি থেকে অসত্য তথ্য প্রচার করতে থাকেন। অনলাইন মাধ্যম থেকে এসব অসত্য তথ্য দিয়ে খবর প্রচার করেন আসামি কাজল।’

অভিযোগপত্রে আরও বলা হয়, ‘বাদীকে পাপিয়ার সঙ্গে জড়িয়ে যৌন সম্রাজ্ঞী হিসেবে মিথ্যা তথ্যের মাধ্যমে তীর চিহ্ন দিয়ে শনাক্ত করেন। পাশাপাশি বাদীকে নারী ব্যবসা ও মাদক ব্যবসায় পাপিয়ার অন্যতম সহযোগী হিসেবে অপমানকর মিথ্যা তথ্য দিয়ে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেয় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজল।’

অভিযোগপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, ‘আসামি ফেসবুক অ্যাকাউন্টে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল, আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের ও বিভিন্ন এমপি-মন্ত্রীসহ বাংলাদেশ যুব মহিলা লীগের সভাপতি নাজমা আক্তার ও সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপিকা অপু উকিলসহ যুব মহিলা লীগের কেন্দ্রীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মিথ্যা ও মানহানিকর তথ্য আপলোড করেন। আসামির আসল উদ্দেশ্য ফেসবুকে এসব তথ্য আপলোড করে নেতাকর্মীদের ভাবমূর্তি নষ্ট করা ও চাঁদাবাজি করা। বাদীর স্বামী আসাদুজ্জামান নাহিদের সঙ্গে বাদীর ছবি থাকায় তাকে নিয়ে অশালীনভাবে মানহানিকর-আপত্তিকর তথ্য আপলোড করে আসামি।’

এর আগে গত ১৭ ডিসেম্বর রাজধানীর হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে দায়ের করা মামলায় কাজলকে জামিন দেন হাইকোর্ট। গত ২৪ নভেম্বর রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় দায়ের করা অপর মামলায় ফটোসাংবাদিক শফিকুল ইসলাম কাজলের জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।

গত বছরের ৯ মার্চ কাজলসহ ৩২ জনের বিরুদ্ধে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা করেন মাগুরা-১ আসনের সংসদ সদস্য সাইফুজ্জামান শেখর। এরপর ১০ ও ১১ মার্চ রাজধানীর হাজারীবাগ ও কামরাঙ্গীরচর থানায় ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে কাজলের বিরুদ্ধে আরও দু‌টি মামলা হয়।

গত বছরের ১৮ মার্চ রাতে কাজলকে অপহরণ করা হয়েছে অভিযোগ এনে চকবাজার থানায় মামলা করেন তার ছেলে মনোরম পলক। ঢাকা থেকে নিখোঁজের ৫৩ দিন পর গত ২ মে রাতে যশোরের বেনাপোলের ভারতীয় সীমান্ত সাদিপুর থেকে অনুপ্রবেশের দায়ে ফ‌টোসাংবাদিক ও দৈনিক পক্ষকালের সম্পাদক শফিকুল ইসলাম কাজলকে আটক করে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)।

এরপর গত বছরের ৩ মে অনুপ্রবেশের দায়ে বিজিবির করা মামলায় আদালতে সাংবাদিক কাজলের জামিন মঞ্জুর হলেও পরে কোতোয়ালি মডেল থানায় ৫৪ ধারায় অপর একটি মামলায় তাকে গ্রেফতার দেখানো হয়।

টিএইচ/এসএসএইচ