মুনতাসীর মামুনের সম্পাদিত একটি বইতে শ্রম প্রতিমন্ত্রী মন্নুজান সুফিয়ানের বাবাকে শান্তি কমিটির সদস্য উল্লেখ করা হয়েছিল। এ নিয়ে শ্রম প্রতিমন্ত্রী ২০১৯ সালে মানহানির মামলা করেন। সেই মামলা বিচারিক আদালতে চলবে বলে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট।

তবে বিচারিক আদালতে থাকা মামলাটিতে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়ার অংশটুকু তামাদির কারণে বাদ দিয়েছেন আদালত।

এ বিষয়ে জারি করা রুলের চূড়ান্ত শুনানি নিয়ে সোমবার (১ নভেম্বর) বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।

আদালতে মুনতাসীর মামুনের আবেদনের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার এ কে রাশেদুল হক। মুন্নুজান সুফিয়ানের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এনামুল হক মোল্লা।

২০০৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে মুনতাসীর মামুন সম্পাদিত ‘বাংলাদেশ চর্চা/৩’ বইটি প্রকাশিত হয়। বইয়ের লেখক মো. আবুবকর সিদ্দিকীর ‘মুক্তিযুদ্ধে দৌলতপুর : একটি সমীক্ষা’ শিরোনামের প্রবন্ধে শান্তি কমিটির সদস্যদের নামের তালিকায় ৩৬ নম্বরে উঠে আসে মুন্নুজান সুফিয়ানের বাবা মরহুম মোসলেম বাওয়ালীর নাম।

পরে ২০১৮ সালের ১ জুলাই বইটির সম্পাদক মুনতাসীর মামুনের কাছে একটি আইনি নোটিশ পাঠান মন্নুজান সুফিয়ান। মুনতাসীর মামুন সে নোটিশের জবাব দেন। এরপর একই বছরের ১৯ জুলাই আবারও মুনতাসীর মামুনকে আইনি নোটিশ পাঠান মন্নুজান সুফিয়ান।

ওই নোটিশে বইয়ে প্রকাশিত তথ্যের দায় স্বীকার করে ক্ষমা চেয়ে তা প্রত্যাহার করতে বলা হয় এবং লেখক আবুবকর সিদ্দিকীর বিস্তারিত তথ্য চাওয়া হয়। কিন্তু মুনতাসীর মামুন এ বিষয়ে রাজি হননি।

পরে প্রতিমন্ত্রী মুন্নজান সুফিয়ান ২০১৯ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি ঢাকার তৃতীয় জেলা জজ আদালতে মুনতাসীর মামুন সহ চারজনের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকার ক্ষতিপূরণ চেয়ে মানহানির মামলা করেন।

এরপর ২০১৯ সালের ২২ জুলাই তামাদি আইনের ২৪ অনুচ্ছেদ উল্লেখ করে মামলাটি বাতিল চেয়ে জজ আদালতে আবেদন করেন মুনতাসীর মামুন। কিন্তু ২০২০ সালের ২৩ জানুয়ারি মুনতাসীর মামুনের সে আবেদনটি খারিজ করে দেন আদালত।

এরপর ওই খারিজ আদেশের বিরুদ্ধে ২০২০ সালের ২৬ আগস্ট হাইকোর্টে রিভিশন আবেদন করেন মুনতাসীর মামুন।

রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে গত বছরের ৩১ আগস্ট ‘বাংলাদেশ চর্চা/৩’ বইয়ের সম্পাদক অধ্যাপক গবেষক মুনতাসীর মামুনের বিরুদ্ধে ৫০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বেগম মন্নুজান সুফিয়ানের করা মানহানির মামলার কার্যক্রম ছয় মাসের জন্য স্থগিত রেখেছিলেন হাইকোর্ট।

ওই মানহানি মামলার বিরুদ্ধে মুনতাসীর মামুনের করা রিভিশন আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি মো. রুহুল কুদ্দস ও বিচারপতি কাজী ইবাদত হোসেনের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

একইসঙ্গে তামাদি সাপেক্ষে বিচারিক আদালতে দায়ের হওয়া মামলাটি বাতিল চেয়ে মুনতাসীর মামুনের আবেদন খারিজ করা কেন বেআইনি ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়েও রুল জারি করেছিলেন আদালত। সেই রুলের চূড়ান্ত শুনানি শেষে আদালত আজ উপরোক্ত রায় দিলেন।

এমএইচডি/এমএইচএস