রাজধানীর মিরপুরের পল্লবী থেকে তিন কলেজছাত্রী নিখোঁজের ঘটনায় আসামি মো. রকিবুল্লাহর (২০) দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতার আরও তিন আসামির বয়স নির্ধারণ নিয়ে আসামিপক্ষ ও রাষ্ট্রপক্ষের  মতবিরোধ থাকায় তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত।

রোববার (৩ অক্টোবর) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট বেগম মাহমুদা আক্তারের আদালত শুনানি শেষে এই আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চার আসামিকে আদালতে হাজির করে সাত দিনের রিমান্ডের আবেদন করেন। এসময় আসামিপক্ষের আইনজীবীরা রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিনের আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষ বিরোধিতা করেন। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রকিবুল্লাহর দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। অপর তিন আসামিকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন। তাদের রিমান্ড শুনানি বয়স নির্ধারণ হওয়ার পর অনু্ষ্ঠিত হবে।

কারাগারে পাঠানো আসামিরা হলেন- মো. তরিকুল্লাহ (১৯), জিনিয়া ওরফে টিকটক জিনিয়া রোজ (১৮) ও শরফুদ্দিন আহম্মেদ অয়ন (১৮)। 

এর আগে শনিবার (২ সেপ্টেম্বর) রাত ৯টায় নিখোঁজ কলেজছাত্রী দিলখুশ জান্নাত নিসার বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ বাদী হয়ে মামলা দায়ের করেন।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে পল্লবী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. পারভেজ ইসলাম বলেন, নিখোঁজ কলেজছাত্রীর বড় বোন অ্যাডভোকেট কাজী রওশন দিল আফরোজ মামলা করেছেন। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলাটি হয়েছে। তিন আসামিকে গতকাল ও এক জনকে আজ আটক করা হয়েছিল জিজ্ঞাসাবাদের জন্য। তাদের ওই মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।

নিখোঁজ শিক্ষার্থীরা হলেন- কাজী দিলখুশ জান্নাত নিসা, কানিজ ফাতেমা ও স্নেহা আক্তার। তারা প্রত্যেকে এইচএসসি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। এর মধ্যে দিলখুশ জান্নাত নিসা মিরপুর গার্লস আইডিয়াল ল্যাবরেটরি ইনস্টিটিউট, স্নেহা পল্লবী ডিগ্রি কলেজ ও কানিজ ফাতেমা দুয়ারিপাড়া কলেজের শিক্ষার্থী। তারা একে অপরের বান্ধবী বলেও পরিবার সূত্রে জানা গেছে।

গত ৩০ সেপ্টেম্বর পল্লবীর ১১ নম্বর প্যারিস রোডের সি -ব্লক ১৮ নম্বর লাইন এলাকা থেকে ওই তিন শিক্ষার্থী নিখোঁজ হন।

নিখোঁজ শিক্ষার্থীদের পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করে বলা হয়, একটি মানবপাচারকারী চক্রের সদস্যরা ওই তিন শিক্ষার্থীকে বিদেশে পাঠানোর প্রলোভন দেখিয়ে বাসা থেকে বের করে। এরপর থেকেই তারা নিখোঁজ রয়েছে। বাসা থেকে বের হওয়ার সময় ওই তিন শিক্ষার্থী নগদ টাকা, স্বর্ণালংকার, স্কুল সার্টিফিকেট ও মূল্যবান সামগ্রী সঙ্গে করে নিয়ে গেছে।

গ্রেফতার হওয়া চার জন মানবপাচারকারী চক্রের সঙ্গে জড়িত বলেও ওই তিন শিক্ষার্থীর পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়। 

টিএইচ/জেডএস