ইভানা লায়লা চৌধুরী

ইভানা লায়লা চৌধুরীর (৩২) মৃত্যুর ঘটনায় দায়ের করা মামলার দুই নম্বর আসামি ইমপালস হাসপাতালের চিকিৎসক এম মুজিবুল হক মোল্লাকে চার সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট। চার সপ্তাহ পর তাকে নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পন করতে বলা হয়েছে।

বুধবার (২৯ সেপ্টেম্বর) বিচারপতি মো. হাবিবুল গনি ও বিচারপতি মো. রিয়াজ উদ্দিন খানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন। 

আদালতে মুজিবুল হকের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট রেজাউল করিম, অ্যাডভোকেট তামান্না আফরিন ও মনিরা হক মনি। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল মাহফুজুর রহমান লিখন।

এদিকে, ইভানার মৃত্যুর ঘটনায় আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় প্রধান আসামি স্বামী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসানও হাইকোর্টের আরেকটি বেঞ্চে জামিন আবেদন করেছেন। গত ২৫ সেপ্টেম্বর ইভানার মৃত্যুর ঘটনায় তার স্বামী ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসানসহ দুইজনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়।

আত্মহত্যায় প্ররোচনার অভিযোগে শাহবাগ থানায় মামলাটি দায়ের করেছেন ইভানার বাবা আমান উল্লাহ চৌধুরী। শাহবাগ থানায় এ মামলার অপর আসামি ইমপালস হাসপাতালের চিকিৎসক অধ্যাপক মুজিবুল হক মোল্লা।

এ বিষয়ে শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদার বলেন, ৩০৬ ও ১০৯ ধারায় দুইজনের নামে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলায় দুইজনকে আসামি করেছেন বাদী। এ বিষয়ে তদন্ত করে আসামিদের বিরুদ্ধে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।

গত ১৫ সেপ্টেম্বর বিকেল পৌনে ৪টার দিকে ৯৯৯ এর মাধ্যমে খবর পেয়ে নবাব হাবিবুল্লাহ রোডের সাকুরা গলিতে দুই ভবনের মাঝখান থেকে ইভানার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়।

মওদুত হাওলাদার তখন বলেছিলেন, পরীবাগে নবাব হাবিবুল্লাহ রোডের ২/ক/১৪ নম্বর ৯ তলা ভবনের পঞ্চম তলায় থাকতেন ইভানা। সেখানে দেখা যায়, ভবনের ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েছেন তিনি। সেদিন রাতেই শাহবাগ থানায় অপমৃত্যুর মামলা দায়ের করেন তার চাচাতো ভাই এএসএম মাহাবুব উল্লাহ চৌধুরী।

তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও ইভানার পরিবার সূত্রে জানা যায়, ইভানার শ্বশুর ইসমাইল হোসেন একজন অবসরপ্রাপ্ত সচিব। নিহতের স্বামী আবদুল্লাহ মাহমুদ হাসান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী। ইভানার সঙ্গে ২০১১ সালে পারিবারিকভাবে তার বিয়ে হয়। এই দম্পতির দুটি ছেলে রয়েছে। 

ইভানার পরিচিত ও স্বজনদের দাবি, তার স্বামী আব্দুল্লাহ মাহমুদ হাসান ওরফে রুম্মানের আচরণ সন্দেহজনক। বিয়ের পর থেকেই ইভানার ওপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করা হয়েছে। তাকে প্ররোচনা দিয়ে আত্মহত্যায় বাধ্য করা হয়েছে, যা হত্যার শামিল। ঘটনার দিনও ঝগড়া হয়েছে তাদের। তার আগের দিনও ঝগড়ার সূত্র ধরে নিজের হাত নিজেই কেটেছিলেন ইভানা।

এমএইচডি/ওএফ