পিকে হালদার কাণ্ড: সন্দেহজনক ৮৩ ব্যক্তির অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ
পিকে হালদারের (প্রশান্ত কুমার হালদার) সহযোগী সন্দেহজনক ৮৩ ব্যক্তির ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ আছে বলে হাইকোর্টকে জানিয়েছে বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
বুধবার (২০ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বিএফআইইউ’র দাখিল করা প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
হাইকোর্টে দাখিল করা প্রতিবেদনে পিকে হালদার ও তার ৮৩ সহযোগী এবং ৪৩টি নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের নামে ঋণ দিয়ে একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের বিস্তারিত তথ্যও উঠে এসেছে। এসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের ব্যাংক হিসাব এরইমধ্যে ফ্রিজ অবস্থায় রয়েছে বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।
বিএফআইইউ তার গোয়েন্দা প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে, ২০১৫ সালে ন্যাচার এন্টারপ্রাইজ লি., বিআর ইন্টারন্যাশনাল লি., নিউ টেক এন্টারপ্রাইজ লি. ও হাল ইন্টারন্যাশনাল লি. নামের প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লি. অধিগ্রহণের পরবর্তী ৩/৪ বছরে দুর্নীতি, জালিয়াতি ও বিভিন্ন অনিয়মের মাধ্যমে নামসর্বস্ব ও কাগুজে প্রতিষ্ঠানের ঋণের নামে লেয়ারিংয়ের মাধ্যমে বিভিন্ন ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ও ক্যাপিটাল মার্কেটে ২ হাজার ৪৬৭ কোটি টাকা সরিয়ে আত্মসাৎ করা হয়। প্রতিষ্ঠানটির বিতরণ করা মোট ঋণের পরিমাণ ৩ হাজার ৬৩৪ কোটি টাকা। আত্মসাৎ করা অর্থ বিতরণ করা ঋণের ৬৭ দশমিক ৯১ শতাংশ। এ বিষয়ে গোয়েন্দা প্রতিবেদনে ৪৩টি ঋণগ্রহীতা প্রতিষ্ঠানের নামে বিতরণ করা ঋণের অর্থের গতিপথসহ প্রকৃত সুবিধাভোগীদের বিষয়ে উল্লেখ রয়েছে।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, সার্বিক পর্যালোচনায় ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের পরিচালনা পর্ষদ, শীর্ষ ব্যবস্থাপনা, অভ্যন্তরীণ নিরীক্ষা বিভাগ, চিফ ফাইন্যান্সিয়াল অফিসার, ক্রেডিট ডিভিশনের কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় পিকে হালদার ও তার সহযোগীরা ৮৩ ব্যক্তির ঋণের আড়ালে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও জালিয়াতির মাধ্যমে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির দুই-তৃতীয়াংশের বেশি অর্থ আত্মসাৎ করেছেন।
এই দুর্নীতি ও জালিয়াতি মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে সম্পৃক্ত অপরাধ।
চারটি নন-ব্যাংকিং আর্থিক প্রতিষ্ঠান থেকে পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের আত্মসাৎ করা অর্থের পরিমাণ কয়েক হাজার কোটি টাকা। প্রতিষ্ঠানগুলো হলো- ইন্টারন্যাশনাল লিজিং অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস লিমিটেড, ফাস ফাইন্যান্স, পিপলস লিজিং ও রিলায়েন্স ফাইন্যান্স। নিজ আত্মীয়-স্বজন ও সহযোগীদের মাধ্যমে নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান তৈরি করে তিনি এই অর্থ আত্মসাৎ করে কানাডায় পালিয়ে যান।
কানাডা, সিঙ্গাপুরসহ বিভিন্ন দেশে পাচার করেন কয়েক হাজার কোটি টাকা। এসব প্রতিষ্ঠানের অর্থপাচার নিয়েও তদন্ত অব্যাহত রেখেছে দুদক ও বিএফআইইউ।
এমএইচডি/জেডএস