চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে কর্তৃপক্ষের অবহেলায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে শিশু মো. ইশানের (৬) অঙ্গহানির ঘটনায় চিকিৎসা এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ ৫ কোটি টাকা কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছেন হাইকোর্ট।

রোববার (২২ আগস্ট) বিচারপতি এম. ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমানের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রুল জারি করেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী মো. শামছুল ইসলাম শিমুল। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিপুল বাগমার।

চার সপ্তাহের মধ্যে জ্বালানি সচিব, পল্লী বিদ্যুতের চেয়ারম্যান, পল্লী বিদ্যুতের আঞ্চলিক কার্যালয়ের ব্যবস্থাপক, চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকসহ ৬ জনকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, চট্টগ্রামের বাঁশখালীর কাথুরিয়া গ্রামের মো. ইব্রাহিমের বাড়ির ছাদে পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি হেলে পড়ে। পরে বিভিন্ন সময় পল্লী বিদ্যুতের বাঁশখালী আঞ্চলিক কার্যালয়ে খুঁটি ও তার সরানোর জন্য বলা হয়। সর্বশেষ গত বছরের ১১ ফেব্রুয়ারি আঞ্চলিক কার্যালয়ে লিখিতভাবে আবেদন করা হয়। লিখিত আবেদনের পরেও বিদ্যুতের তার ও খুঁটি সরানো হয়নি। এ অবস্থায় গত বছরের ৪ মার্চ মো. ইব্রাহিমের শিশু সন্তান মো. ইশান ছাদে উঠে  বিদ্যুৎস্পৃষ্টে আহত হয়। পরে তাকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখান থেকে ওই দিনই তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। পরবর্তীতে সেখান থেকে তাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক ইনস্টিটিউটে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিশুটির ডান হাত, বাঁ পা ও পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলা হয়। গত বছর ১০ মে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পায় শিশুটি। তবে উন্নত চিকিৎসার জন্য শিশুটিকে দেশের বাইরে নিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেন চিকিৎসকরা।

আইনজীবী জানান, শিশুটির চিকিৎসা এবং ক্ষতিপূরণ বাবদ বিভিন্ন সময় চিঠি দেওয়া হয় পল্লী বিদ্যুৎ কর্তৃপক্ষকে। সর্বশেষ গত ২৫ জুন ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে পল্লী বিদ্যুতের আঞ্চলিক কার্যালয়ে আবেদন করেন শিশুটির বাবা।

এরপর আইনজীবীর মাধ্যমে গত ১৩ জুলাই আইনি নোটিশ পাঠানো হয়। ওই নোটিশে ক্ষতিপূরণ দিতে ১৫ দিনের সময় বেঁধে দেওয়া হয়। কিন্তু বিবাদীদের কাছ থেকে কোনো সাড়া না পাওয়ায় গত বৃহস্পতিবার ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন শিশুটির বাবা মো. ইব্রাহীম। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত রুল জারি করেন।  রুলে শিশু ইশানকে ৫ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না তা জানতে চাওয়া হয়।

এমএইচডি/এসকেডি