ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন

ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ইভ্যালির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মো. রাসেলের কাছ থেকে টাকা আদায় করে বিনিয়োগকারী সাধারণ মানুষকে ফেরত দিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন। তিনি বলেন, সরকারের ভিতরে লুকিয়ে থাকা কিছু দুর্নীতিবাজ অফিসারের কারণে ইভ্যালি এতদূর এসেছে। এসব দুর্নীতিবাজদের খুঁজে বের করতে হবে।

শনিবার (১৭ জুলাই) রাতে ফেসবুক লাইভে এসে সরকারের প্রতি এ আহ্বান জানান সুমন।

ব্যারিস্টার সুমন বলেন, ‘আজ দেখলাম ইভ্যালির বিভিন্ন অফিস খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। হটলাইনেও নাকি তাদের পাওয়া যাচ্ছে না। আমি ইভ্যালির ব্যাপারে মানুষকে সচেতন করেছিলাম প্রায় ১৫/২০ দিন আগেই। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে ভিডিওগুলো করার পর, ইভ্যালি নিয়ে এত কিছু শোনার পরও খেয়াল করে দেখলাম মানুষ ইভ্যালি থেকে ২০০ কোটি টাকার প্রি-অর্ডার করেছে। আমার মনে প্রশ্ন- এই মানুষগুলো কি লোভের দ্বারা এত বেশি তাড়িত যে আবারও ২০০ কোটি টাকার অর্ডার দিতে হবে? 

তিনি বলেন, আমি একটা বিষয় জানতে চাই- ইভ্যালিকে ৬০০/৭০০ কোটি দায় পর্যন্ত আনতে নেপথ্যে কারা? তাদের লাইসেন্সটা কারা দিলো? এই আমাদের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের মাননীয় সচিব নাকি রোববার মিটিংয়ে বসবেন ইভ্যালি নিয়ে। ইভ্যালির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে।  ইভ্যালির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়ার কী আছে? আপনারা তো ডেসটিনির ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ডেসটিনি এত বড় হয়ে যাওয়ার পর তারে জেলে ঢুকাইছেন- কিন্তু পাবলিক তো শেষ। এখন ইভ্যালির রাসেল সাহেবকে ধরে যদি অপরাধের কারণে ফাঁসিও দেন তাতে লাভ কী জনগণের?

সুমন বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংককে জিজ্ঞেস করতে চাই, ইনটেলিজেন্ট ইউনিট যারা আছে তাদের কাজ কী? (দেশে) যে যেভাবে ইচ্ছে ব্যবসা করতে পারবে? যা ইচ্ছে বলতে পারবে? বিজ্ঞাপনের নামে যা ইচ্ছে দিতে পারবে? ডেসটিনি একবার সাধারণ মানুষকে শেষ করে দিয়েছে। এখন ইভ্যালি-ধামাকার মতো প্রতিষ্ঠানগুলোকে এই জায়গা পর্যন্ত এনেছে কে? বাণিজ্য মন্ত্রণালয় কি বোঝে না? ৫০ পার্সেন্টের কম দামে হাজার হাজার পণ্য দিয়ে দিচ্ছে, এই প্রতিষ্ঠান যে ভেঙে পড়বে এটা কি তারা বোঝে না? লক্ষ লক্ষ মানুষের টাকার এই দায়টা এখন কে নেবে? আমি মাননীয় বাণিজ্য মন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করতে চাই- এখন কী হবে এই মানুষগুলোর?

এ সময় ব্যারিস্টার সুমন বলেন, হাজারো মানুষ ইভ্যালিতে লাখ লাখ টাকা বিনিয়োগ করে এখন দিশেহারা। জানি না রাসেল সাহেব এই টাকা কই নিয়ে গেছেন। তবে একটা কথা মনে রাখবেন- বাংলাদেশের দুইটা ক্ষতি হয়ে গেল। সাধারণ মানুষ টাকা হারিয়ে এখন পথে বসবে। আরেকটা হচ্ছে অনলাইন বিজনেস যা একটু ভালোর দিকে যাচ্ছিল ইভ্যালির বাজে উদাহরণ অনলাইন বিজনেস দাঁড়ানোর পথ বন্ধ করে দিলো। লাভ হলো কিছু দুর্নীতিগ্রস্ত অফিসারের। ইভ্যালির কাছ থেকে সুবিধা নিয়ে তারা ইভ্যালিকে এতদূর নিয়ে এসেছিলেন। আজ সাধারণ মানুষকে পথে বসিয়ে দিলেন। আমি সরকারের কাছে অনুরোধ জানাব- যেভাবে পারেন ইভ্যালির রাসেলকে আইনের আওতায় এনে সাধারণ মানুষের টাকা ফেরত দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। না হলে এ মানুষগুলোর বদদোয়াতে বাংলাদেশকে সোনার বাংলা বানানো অনেক বেশি কঠিন হয়ে যাবে।

এমএইচডি/এইচকে