ট্রাকের ধাক্কায় অভিনেত্রী আয়েশা আক্তার আশার মৃত্যুর ঘটনায় এক কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ চেয়ে রিট দায়ের করা হয়েছে।

রোববার (১০ জানুয়ারি) হাইকোর্টের সংশ্লিষ্ট শাখায় আশার মা এ রিট দায়ের করেন।

সোমবার (১১ জানুয়ারি) রিট দায়েরের বিষয়টি নিশ্চিত করে আইনজীবী আনিচুর রহমান বলেন, শিগগিরই বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি মো. খায়রুল আলমের হাইকোর্ট বেঞ্চে এটি উপস্থাপন করা হবে।     

গত ৬ জানুয়ারি (বুধবার) একটি জাতীয় দৈনিকে প্রকাশিত ‘অভিনেত্রী আশার মৃত্যুর ঘটনায় মোটরসাইকেলচালক কারাগারে’ শীর্ষক প্রতিবেদনসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে প্রকাশিত প্রতিবেদন যুক্ত করে এ রিট করা হয়।

আবেদনে দুর্ঘটনার জন্য কারা দায়ী তা নিরূপনে স্বাধীন তদন্ত কমিটি করতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ হবে না, এই মর্মে রুল জারির আর্জি জানানো হয়েছে। একইসঙ্গে আশার পরিবারকে কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা চাওয়া হয়েছে।  

আবেদনে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগের সচিব, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, বাংলাদেশ রোড ট্রান্সপোর্ট করপোরেশনের চেয়ারম্যান, ঢাকা মহানগর পুলিশের কমিশনারসহ সংশ্লিষ্ট আটজনকে বিবাদী করা হয়েছে।  

পত্রিকার ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, রাজধানীর দারুস সালাম টেকনিক্যাল মোড়ে ট্রাকের ধাক্কায় অভিনেত্রী আয়েশা আক্তারের (আশা) মৃত্যুর ঘটনায় করা মামলায় মোটরসাইকেলের চালক শামীম আহমেদকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। ৬ জানুয়ারি বুধবার তাকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

গত ৪ জানুয়ারি সোমবার রাত ২টার দিকে দারুস সালাম টেকনিক্যাল মোড়ে একটি ট্রাকের ধাক্কায় রাস্তায় ছিটকে পড়ে ঘটনাস্থলেই মারা যান আয়েশা। পরে পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠায়।

৫ জানুয়ারি আশার বাবা আবু কালাম বাদী হয়ে মোটরসাইকেলের চালক শামীম আহমেদকে আসামি করে দারুস সালাম থানায় মামলা করেন।
 
মামলায় অভিযোগ করা হয়, ছয়-সাত বছর ধরে আসামি শামীম আহমেদের সঙ্গে আশার পরিচয় ছিল। প্রায়ই শামীম আশাদের বাসায় যাতায়াত করতেন। আশার পরিবারও তাকে বিশ্বাস ও স্নেহ করতেন। মাঝেমধ্যে এবং অভিনয়ের কাজে আসা-যাওয়ায় সহযোগিতা করতেন শামীম। ৪ জানুয়ারি রাত ১১টার দিকে বনানী অফিস থেকে বের হওয়ার সময় আশা তার বাবাকে ফোন করে বলেন, ‘আমি কিছুক্ষণের মধ্যে বাসায় আসছি।’ তারপর আবার ফোন করে তিনি বলেন, ‘বাড়ির কাজের ব্যাপারে ইঞ্জিনিয়ারের সঙ্গে কথা হয়েছে। কাজ নিয়ে কোনো সমস্যা হবে না। আমি শামীম ভাইয়ের সঙ্গে চলে আসব।’ 

এ সময় শামীম ফোনে বলেন, আপনার মেয়ে যেভাবে বলে, সেভাবে কাজ করেন তাহলে ভালো হবে। পরে রাত পৌনে দুইটার দিকে শামীম ফোন করে জানান, ‘আশা আর নেই। টেকনিক্যাল মোড়ে একটি অজ্ঞাত ট্রাকের নিচে চাপা পড়ে মৃত্যুবরণ করেছে।’

মামলার এজাহারে আরও উল্লেখ করা হয়, শামীম বেপরোয়া গতিতে মোটরসাইকেল চালিয়ে দুই ট্রাকের মাঝখান দিয়ে দ্রুতগতিতে যাওয়ার সময় সামনের ট্রাকের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। এতে আশা মোটরসাইকেলের পেছন থেকে ছিটকে পড়ে যান। এরপর পেছন থেকে দ্রুতগতিতে আসা একটি অজ্ঞাত ট্রাক তাকে চাপা দিলে মাথায় জখম হয়ে ঘটনাস্থলেই আশা মারা যান।

আশা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব বিজনেস অ্যান্ড টেকনোলজির (বিইউবিটি) আইন বিভাগের ষষ্ঠ সেমিস্টারে পড়ছিলেন।

এমএইচডি/জেডএস