অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন (ডানে) ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির

স্ত্রী হত্যার দায়ে মৃত্যুদণ্ড মাথায় নিয়ে ১৪ বছর ধরে কারাগারে থাকা নীলফামারীর স্বপন কুমার বিশ্বাসের সাজা কমাতে বিনা পয়সায় আইনি লড়াইয়ে নেমেছেন ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট খন্দকার মাহবুব হোসেন ও অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির।

কিন্তু খন্দকার মাহবুব হোসেনের মতো একজন বড় আইনজীবী কেন বিনা পয়সায় স্বপনের মামলাটি লড়ছেন। এর জবাবে তিনি বলেন, কারাগার থেকে স্বপন কুমার বিশ্বাস নামে ওই ফাঁসির আসামি অনেক কাকুতি-মিনতি জানিয়ে চিঠি লিখেছিলেন। চিঠিতে তিনি লেখেন, তিনি দরিদ্র মানুষ। আইনজীবী রেখে মামলা পরিচালনা করার সামর্থ্য তার নেই। এ কারণে তার মামলাটি বিনামূল্যে পরিচালনা করছি। এর আগেও কিছু মামলা আমি বিনামূল্যে পরিচালনা করেছি। 

বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বাধীন ৬ বিচারপতির আপিল বেঞ্চে ভার্চুয়ালি স্বপন কুমারের মামলার শুনানি হয়।

শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, স্বপ্না ঘোষকে পরিকল্পনা করে হত্যা করা হয়নি। পারিবারিক ঝগড়ার এক পর্যায়ে উত্তেজিত অবস্থায় এ ঘটনা  ঘটেছে। এ কারণে আসামি স্বপন কুমার বিশ্বাসকে মৃত্যুদণ্ড ও যাবজ্জীবন দণ্ড কোনোটাই দেওয়া সমীচীন হবে না। এ মামলায় প্যানাল কোডের ৩০৪/২ ধারা অনুযায়ী আসামির সর্বোচ্চ সাজা ১০ বছরের বেশি হতে পারে না। 

শুনানিতে খন্দকার মাহবুব হোসেনকে সহযোগিতা করেন তার জুনিয়র নবীন ফৌজদারি আইন বিশেষজ্ঞ অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। অন্যদিকে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী শেখ মোহাম্মদ মোরসেদ আসামির মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখার আর্জি জানান। শুনানি শেষে সর্বোচ্চ আদালত রায়ের জন্য আগামী ১২ জুলাই দিন ধার্য করেন।

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, প্রথম স্ত্রী স্বপ্না ঘোষকে না জানিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে করা নিয়ে ২০০৬ সালের ১৬ অক্টোবর পারিবারিক কলহের এক পর্যায়ে স্ত্রীর মাথায় আঘাত করেন স্বপন। এতে স্বপ্না ঘোষ মারা যান। এ হত্যাকাণ্ডের অপরাধে দায়ের হওয়া মামলায় ২০০৮ সালের ১৮ নভেম্বর  নীলফামারীর দায়রা জজ আদালত তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।

২০১৪ সালের ৯ এপ্রিল বিচারপতি সাহিদুল ইসলাম ও বিচারপতি আব্দুর রবের হাইকোর্ট বেঞ্চ তার মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এর বিরুদ্ধে আসামি স্বপন কুমার বিশ্বাস আপিল করেন। আপিল বিভাগে আজ শুনানি শেষে রায়ের জন্য আগামী ১২ জুলাই দিন ধার্য করেন।

এমএইচডি/এনএফ