রাজধানীর তোপখানা রোডে শিশু গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগে গৃহকর্তা তান‌ভির আহসান ও তার স্ত্রী অ্যাড‌ভো‌কেট না‌হিদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন আদালত। 

রোববার (৪ জুলাই) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন। আদালতের সংশ্লিষ্ট সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

সূত্র জানায়, শাহবাগ থানার ফৌজদারী কার্যবিধির ৫৪ ধারায় তাদের গ্রেফতার করে আদালতে হাজির করেন মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক জাহাঙ্গীর হোসেন। তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদেরকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

এর আগে শনিবার ৩ জুলাই তাদের আটক করে পুলিশ। এ ঘটনায় নির্যাতনের শিকার গৃহকর্মীর নাম সুইটি (১২)। তার বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন থানার নবাবপুর থানায়। 

শনিবার (৪ জুলাই) দিবাগত রাতে পুলিশ সদর দফতরের এআইজি (মি‌ডিয়া অ্যান্ড পাব‌লিক রি‌লেশন্স) মো. সোহেল রানা এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মো. সোহেল রানা বলেন, অভাবের তাড়নায় দরিদ্র বাবা-মা সুইটিকে রাজধানীর তোপখানা রো‌ডের এক বাসায় গৃহকর্মীর কাজে দিয়েছিলেন। এখানে সে ৯ মাস ধরে কাজ করছে। প্রায় প্রতিদিনই তাকে নানা অজুহাতে গৃহকর্তা ও গৃহকর্ত্রী উভয়ই মারধর করতেন। একপর্যায়ে শনিবার (৩ জুলাই) মেয়েটিকে নির্যাতনে আঘাতের চিহ্নসহ কিছু ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পোস্ট করেন এক প্রতিবেশী। ছবিগুলো পোস্ট দিয়ে তিনি দ্রুত সহযোগিতা ও আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানান।

তিনি বলেন, ছবিতে মেয়েটির চোখের নিচে আঘাতের চিহ্ন ও হাতে গুরুতর জখম। অপর এক ছবিতে মেয়েটির পশ্চাৎ দেশে উভয়পাশে আগুনে পোড়া ঘা চোখে পড়ে। এই পোস্টটি একজন গণমাধ্যমকর্মী পুলিশের মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইংকে পাঠিয়ে দ্রুত সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন। ঘটনাস্থল কোন থানার অধীনে তা তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত না হওয়ায় মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশন্স উইং বিষয়টি জানার সঙ্গে সঙ্গেই রমনা থানার ওসি মো. মনিরুল ইসলাম ও শাহবাগ থানার ওসি মওদুত হাওলাদারের সঙ্গে যোগাযোগ করে এ‌ বিষ‌য়ে দ্রুত ব্যবস্থা নি‌তে নি‌র্দেশনা দেয়।

তিনি আরও বলেন, উভয় থানা থেকেই দ্রুতগতিতে ঘটনাস্থলের দিকে একটি করে টিম ছুটে যায়। পরবর্তীতে জানা যায়, ঘটনাস্থলটি শাহবাগ থানার অধীনে। এরপর শাহবাগ থানার একটি টিম মেয়েটিকে উদ্ধার করে। এ সময় নির্যাতনের অভিযোগে অভিযুক্তদের আটক করে।

মো. সোহেল রানা বলেন, ফেসবুকে দেওয়া পোস্টের মাত্র দেড় ঘণ্টার মধ্যে ও পুলিশের নজরে আসার মাত্র এক ঘণ্টার মধ্যে ভিকটিমকে উদ্ধার ও অভিযুক্তদের গ্রেফতার হয়েছে।

টিএইচ/ওএফ