বাম থেকে: অ্যাডভোকেট রুৎবা ইখতিলাত তুলি, ইশরাত হাসান, সাঈদা ইয়াসমিন, ইসমাত সুলতানা দিপা, তাজুরীয়ান সানী, রোকসানা শিরিন ও শায়লা জাহান

দেশের সব্বোর্চ আদালতে দৃপ্ত পদচারণায় এগিয়ে চলছে নারীরা। সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির ১০ হাজার ৩৬৩ সদস্যর মধ্যে এক হাজার ৭৩৭ নারী আইনজীবীর সংখ্যা আশা জাগানিয়া। পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় বা বিট্রিশ ল’ পড়ে শুধু নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো থেকে বিপুল সংখ্যক মেয়ে আইন পেশায় এসেছে। এর মধ্যে পিছিয়ে নেই স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির মেয়েরাও।

স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির থেকে গ্র্যাজুয়েশন করে আসা উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মেয়ে উচ্চ আদালতে আইনপেশা চালিয়ে যাচ্ছেন। নিজ যোগ্যতায় ও কর্মে আইনপেশায় শক্ত অবস্থান করে নিয়েছেন তারা। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটির আইনপড়ুয়া হাইকোর্টের ৭ জন নারী আইনজীবীকে নিয়ে এ প্রতিবেদন।

অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান: স্ট্যামফোর্ড থেকে আইনে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে আইনপেশা শুরু করেন ইশরাত। ২০১৫ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। জনস্বার্থে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচিত রিট করে দেশজুড়ে সুনাম কুড়িয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের পাবলিক প্লেসগুলোতে ব্রেস্টফিডিং রুম স্থাপন এবং গর্ভের সন্তানের লিঙ্গ পরিচয় প্রকাশে আইনি লড়াইয়ের স্বীকৃতিস্বরুপ আন্তর্জাতিক প্রো-বোনো অ্যাওয়ার্ড-২০২০ অর্জন করেন। আন্তর্জাতিক বার অ্যাসোসিয়েশন (আইবিএ) তাকে এ অ্যাওয়ার্ড দেয়। ইশরাতের স্বামী শেখ সাদী রহমান একজন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তা। আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের সিনিয়র গবেষণা কর্মকর্তা।  বাবা রাশিদুল হাসান সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী।

অ্যাডভোকেট ইসমাত সুলতানা দিপা: বগুড়ার মেয়ে ইসমাত সুলতানা দিপা। ছোটবেলা থেকে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে জড়িত দিপা ২০০৪ সালে ক্লোজআপ ওয়ান প্রতিযোগিতায় প্রথম রাউন্ডে জয়ী হয়েছিলেন। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে গ্র্যাজুয়েশন করে আইনপেশা শুরু করেন। ২০১০ সালে জজ কোর্টে ও ২০১৫ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন দিপা। তিনি বর্তমানে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অ্যাডভোকেট আলাউদ্দিন আহমদের চেম্বারে জুনিয়র হিসেবে কাজ করছেন। স্বামী নাইমুল আহমেদও আইনজীবী। আইনপেশায় অবদান রাখতে চান অ্যাডভোকেট দিপা।

অ্যাডভোকেট সাঈদা ইয়াসমিন: কুমিল্লার মেয়ে অ্যাডভোকেট সাঈদা ইয়াসমিন। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে  গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে আইনপেশা শুরু করেন। ২০১৩ সালে জজকোর্টে আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। ২০১৫ সালে হাইকোর্টের এনরোলমেন্ট পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হন। আইনপেশায় ভালো করার পাশাপাশি তিনি সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়। সুপ্রিম কোর্ট বারের বিভিন্ন সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে তিনি গান পরিবেশন করেন। অ্যাডভোকেট সাঈদা ইয়াসমিনের স্বামী প্রকৌশলী। সাঈদা সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার ফখরুল ইসলামের জুনিয়র হিসেবে উচ্চ আদালতে আইনপেশা চালিয়ে যাচ্ছেন।

অ্যাডভোকেট শায়লা জাহান: সিলেটের মেয়ে শায়লা জাহান। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করে আইনপেশা শুরু করেন। ২০১৩ সালে জজকোর্টে ও ২০১৭ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। অ্যাডভোকেট শায়লা জাহানের স্বামী একজন ব্যাংকার। মিষ্টি কণ্ঠের অধিকারী শায়লা সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডেও সক্রিয়। আইনপেশায় অনেকদূর যেতে চান, সমাজের জন্য অবদান রাখতে চান শায়লা।

অ্যাডভোকেট রোকসানা শিরিন: ময়মনসিংহের মেয়ে রোকসানা শিরিন। বাবা-মা কৃষি বিভাগে চাকরি করেন। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে অনার্স ও ইস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স শেষ করে আইনপেশায় প্রবেশ করেন। ২০১২ সালে জজ কোর্টে ও ২০১৭ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন রোকসানা। আইনপেশায় থেকে সমাজের মানুষের জন্য কাজ করতে চান রোকসানা।

অ্যাডভোকেট তাজুরীয়ান সানী: পুরান ঢাকার মেয়ে তাজুরীয়ান সানী। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে এলএলবি অনার্স ও এলএলএম শেষ করে আইন পেশায় আসেন। সানীর দাদা তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের দায়রা জজ ছিলেন। সুপ্রিম কোর্টের বিশিষ্ট আইনজীবী অ্যাডভোকেট জেড আই খান পান্নার চেম্বারের জুনিয়র হিসেবে কাজ করছেন সানী।

অ্যাডভোকেট রুৎবা ইখতিলাত তুলি: নারায়ণগঞ্জের মেয়ে রুৎবা তুলি। তার বাবা-মা দুজনই আইনজীবী। স্ট্যামফোর্ড ইউনিভার্সিটি থেকে আইনে গ্র্যাজুয়েশন শেষ করেন। বাবা-মায়ের পদাঙ্ক অনুসরণ করে আইনপেশা শুরু করেন। ২০১২ সালে ঢাকা জজ কোর্ট ও ২০১৭ সালে হাইকোর্টের আইনজীবী হিসেবে তালিকাভুক্ত হন। রুৎবা তুলি একজন শুট্যার। একজন সফল আইনজীবী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে সমাজের কল্যাণে কাজ করতে চান তিনি।

ওই সাতজন ছাড়াও স্ট্যামফোর্ড থেকে পাস করে আসা আরও বেশ কয়েকজন নারী আইনজীবী আইনপেশায় সফলতার দিকে এগিয়ে যাচ্ছেন।

এমএইচডি/এসএম