রাজধানীর ভাটারায় তানিয়া বেগম নামের এক নারীকে ২০১৯ সালে হত্যা মামলায় ফয়সাল নামের এক ব্যক্তিকে হাইকোর্টের দেওয়া জামিন স্থগিত করেছেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত।

সোমবার (৩১ মে) রাষ্ট্রপক্ষের আবেদনের শুনানি নিয়ে চেম্বার বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর আদালত এই আদেশ দেন। আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ড. মো. বশির উল্লাহ।

২০১৯ সালের ২৫ মে রাজধানীর ভাটারার ছোলমাইদ বসুমতী এলাকার একটি বাসা থেকে তানিয়া বেগমের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তানিয়ার ভাই মেহেদী হাসান বাদী হয়ে ২৬ মে ভাটারা থানায় অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে হত্যা মামলা করেন। তানিয়া বেগম হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ফয়সাল (২৫) নামে এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করে একদিন পর আদালতে পাঠায় পুলিশ।

মামলার এজাহার অনুযায়ী, ১০-১১ বছর আগে তানিয়ার সঙ্গে শাহ আলম নামের একজনের বিয়ে হয়। বিয়ের পর একটি কন্যা সন্তানের জন্ম হয়। ওই শিশুর বয়স আট বছর। কিন্তু শাহ আলমের সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় দুই বছর আগে তাদের মধ্যে বিচ্ছেদ হয়। কয়েক মাস আগে তানিয়া তার ভাইকে ফোন করে জানান, একটি ছেলের সঙ্গে বিয়ের কথাবার্তা চলছে। ২৫ মে তানিয়ার মোবাইল ফোন বন্ধ পাওয়া যায়। পরে পুলিশ ফোন করে তার ভাইকে জানায়, তানিয়ার মরদেহ পাওয়া গেছে ভাটারা এলাকার একটি বাসায়।

এদিকে ফয়সালকে গ্রেফতারের পর ভাটারা থানা পুলিশ জানিয়েছে, তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় ফয়সালকে গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের একপর্যায়ে ফয়সাল জানায়, ২০১৯ সালের মার্চ মাসে তানিয়ার সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের পর তার সঙ্গে ফোনে কথা হয়। বিভিন্ন অজুহাতে তানিয়া তার কাছে টাকা পয়সা চাইতো। একপর্যায়ে তানিয়া তাকে ভালোবাসে বলে জানায়। তিনিও তানিয়ার প্রতি দুর্বল হন। একসময় স্বামী-স্ত্রীর পরিচয়ে ভাটারা এলাকায় বাসা ভাড়া নেন তারা। সেখানে তিনি (ফয়সাল) মাঝে মধ্যে আসা যাওয়া করতেন। একপর্যায়ে তানিয়া তাকে জানায় সে অন্তঃসত্ত্বা। এরপর থেকে তাদের মধ্যে ঝামেলার সৃষ্টি হয়।

পরে ঘটনার দিন রাতে ফয়সাল ডান হাত দিয়ে তানিয়ার গলা চেপে ধরেন। বাম হাত দিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে তানিয়ার মৃত্যু নিশ্চিত করেন। পরে তানিয়ার মরদেহ বিছানার চাদর ও তোষক দিয়ে মুড়ে ঘরে তালা মেরে বেরিয়ে যান। তানিয়ার মোবাইল ফোন ও বাসার চাবি ম্যানহোলের মধ্যে ফেলে দেন ফয়সাল।

এমএইচডি/জেডএস