গির্জায় সুব্রত বৈদ্য হত্যা মামলায় সব আসামি খালাস

১৩ বছর আগে রাজধানীর মিরপুরের একটি গির্জায় সুব্রত বৈদ্যকে হত্যার অভিযোগে দায়ের করা মামলায় সব আসামিকে খালাস দিয়েছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১৩ মার্চ) ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৮ এর বিচারক মো. মঞ্জুরুল হোসেন আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি মর্মে খালাসের এ রায় দেন।

খালাসপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন—রিপন দাস, শিমন শিকদার এবং প্রভুদান বাড়ৈ। তাদের মধ্যে প্রভুদান বাড়ৈ পলাতক। অপর দুই আসামিকে রায় ঘোষণার সময় কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী ফজলুর রহমান এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার বিচার চলাকালে সুব্রত বৈদ্যর প্রেমিকা নীপা দাস, তার বাবা নিবারণ দাস ও মা লিন্ডা দাস মারা গেছেন। তাদের আগেই মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়।

জানা যায়, ২০১১ সালে সুব্রত বৈদ্য মিরপুর বাংলা কলেজে স্নাতক শ্রেণিতে পড়াশোনা করতেন। চার বোনের একমাত্র ভাই সুব্রত। আর্থিক অনটনের কারণে মা-বাবা লেখাপড়ার খরচ জোগাতে না পারায় সুব্রত মিরপুর মাজার রোডের দ্বিতীয় কলোনির মেথদ লিস্ট চার্চ সানডে স্কুলে শিক্ষকতা করতেন। ওই চার্চের নীচ তলায় নীপা দাসের বাসা ছিল। নিপা দাসের সঙ্গে সুব্রতর প্রেমের সম্পর্ক হয়। এ নিয়ে নীপা দাসের ভাই, বাবা ও মায়ের সঙ্গে সুব্রতর সম্পর্ক খারাপ হয়। তারা নীপা দাসের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করতে সুব্রতকে চাপ দেন। সম্পর্ক ছিন্ন না করলে প্রাণনাশেরও হুমকি দেওয়া হয়। পরে ২০১১ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর চার্চে ছাত্রছাত্রীদের ধর্মীয় বিষয়ে পড়ানোর পর চতুর্থ তলায় নীপা তার প্রেমিক সুব্রতকে ডেকে নেন। ওই দিন দুপুর আড়াইটায় নীপা টেলিফোনে সুব্রতের স্বজনদের জানান সুব্রত অসুস্থ। সুব্রতর মা, ভাই, বোন গির্জায় গিয়ে দেখেন তাকে নিয়ে নীপা, তার মা-বাবা ও ভাইরা নিচে নামাচ্ছেন।  পরে তাকে দ্রুত মিরপুরের ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

নীপার পরিবার জানায়, সুব্রত হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। কিন্তু, ময়নাতদন্তে জানা যায়, সুব্রতকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে।

এ ঘটনায় সুব্রতের বোন সুবর্ণা বৈদ্য প্রথমে দারুস সালাম থানায় অপমৃত্যুর মামলা করেন। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পাওয়ার পর তিনি থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। তখন সুবর্ণা বৈদ্য ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করেন। আদালত দারুস সালাম থানাকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন।

পরবর্তীতে দারুস সালাম থানার উপ-পরিদর্শক শাহিন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ তদন্ত শেষে ২০১৩ সালের ২৭ অক্টোবর ছয় জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেন।

এনআর/এআইএস