আগে থেকেই নির্ধারিত ছিল আজ রাশেদ খান মেনন, হাসানুল হক ইনুসহ ১৬ জনকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হবে। তার সংবাদকর্মীসহ সংশ্লিষ্ট সবার অপেক্ষায় ছিল ভিআইপি আসামিরা কখন আসবে। সকাল ১০টার পর একে এক প্রবেশ করতে থাকে আসামিদের বহনকারী প্রিজনভ্যান। বেশ হাসি মুখ নিয়েই আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালে হাজির হয়েছেন সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন এবং জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। 

মঙ্গলবার (১৭ ডিসেম্বর) সকাল সাড়ে দশটার দিকে তাদের আদালতের হাজতখানার সামনে প্রিজনভ্যান থেকে নামানোর সময় এমন চিত্র দেখা যায়। 

প্রিজনভ্যান থেকে শুরুতেই সাবেক মন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাককে নামানো হয়। এ সময়ে দু’জন পুলিশ সদস্য দু’পাশ থেকে তার হাতে এবং বাহুতে ধরেন। আব্দুর রাজ্জাক সেসময় হাত উঠানোর চেষ্টা করেন। তবে পুলিশ সদস্যরা তাদের হাত ধরে রাখার কারণে তিনি উঠাতে পারেননি। এরপর নামেন জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু। তিনি মুখে বেশ হাসি নিয়ে নামেন। এ সময় তিনি সাংবাদিকদের দিকে তাকিয়ে কিছু বলেন। কিন্তু দূরত্বের কারণে তার কথা বুঝা যায়নি। পরে দাঁড়িয়ে হাসিমুখে হাত ও মাথা নাড়েন। এর পেছনে নামেন ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন। তিনি বেশ হাসিমুখেই প্রিজনভ্যান থেকে নেমে আদালতের হাজতখানায় প্রবেশ করেন। 

এর আগে ট্রাইব্যুনালের প্রসিকিউটর আব্দুল্লাহ আল নোমান জানিয়েছেন, জুলাই-আগস্টের গণহত্যার ঘটনায় মানবতাবিরোধী অপরাধের অভিযোগে দায়ের করা দুই মামলায় শেখ হাসিনা, ওবায়দুল কাদেরসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে তদন্ত এক মাসের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। তদন্ত শেষ করে ১৭ ডিসেম্বর প্রতিবেদন দাখিলের কথা রয়েছে। এই মামলাতেই আজ ১৬ জনকে হাজির করা হয়েছে। 

তাদের মধ্যে আছেন সাবেক আওয়ামী লীগ সরকারের মন্ত্রী আনিসুল হক, ফারুক খান, দীপু মনি, আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, কামাল আহমেদ মজুমদার, গোলাম দস্তগীর গাজী, আমির হোসেন আমু ও কামরুল ইসলাম।

আরো আছেন সাবেক উপদেষ্টা তৌফিক-ই ইলাহী চৌধুরী ও সালমান এফ রহমান এবং সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনায়েদ আহমেদ পলক, ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক এবং সাবেক স্বরাষ্ট্রসচিব জাহাঙ্গীর আলম।

মূলত, ছাত্র-জনতার আন্দোলন দমাতে ‘গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধ’ সংঘটনের অভিযোগে গত ১৭ অক্টোবর সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার সরকারের সাবেক মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রীসহ ৪৬ জনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করে ট্রাইব্যুনাল।

এরপর গত ২৭ অক্টোবর আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক ১০ মন্ত্রী, দুই উপদেষ্টা, অবসরপ্রাপ্ত এক বিচারপতি ও সাবেক এক সচিবসহ মোট ১৪ জনকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে ১৮ নভেম্বর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজিরের নির্দেশ দেওয়া হয়।

সে অনুযায়ী ১৮ নভেম্বর সাবেক ৯ মন্ত্রীসহ ১৩ আসামিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়।

আরএইচটি/এসএম