রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে গঠিত কমিটি আট মাসেও প্রতিবেদন দাখিল না করায় উষ্মা প্রকাশ করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ২০২৫ সালের ১২ জানুয়ারির মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

মঙ্গলবার (১৯ নভেম্বর) বিচারপতি ফারাহ মাহবুব ও বিচারপতি দেবাশীষ রায় চৌধুরীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম।

গত ২০ ফেব্রুয়ারি বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে সুন্নতে খতনার জন্য অজ্ঞান করা শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনা তদন্তে নতুন কমিটি গঠন করে দেন হাইকোর্ট। বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আতাবুল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তখন আদালত বলেছিলেন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের কমিটির রিপোর্ট আমাদের মনঃপূত হয়নি। আমরা পাঁচ সদস্যের নতুন কমিটি করে দিচ্ছি।

কমিটিতে তিন জন চিকিৎসক, দুই জন সিভিল সোসাইটির ব্যক্তি ও একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপককে রাখা হয়। কমিটিকে এক মাসের মধ্যে আয়ানের মৃত্যুর পুরো ঘটনা তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়।

সোহওয়ার্দী হাসপাতালের অধ্যাপক ডাক্তার এ বি এম মাকসুদুল আলমকে এ কমিটির চেয়ারম্যান করা হয়।

আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল তুষার কান্তি রায়। সঙ্গে ছিলেন সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল সেলিম আজাদ। রিটের পক্ষে ছিলেন অ্যাডভোকেট এ বি এম শাহজাহান আকন্দ মাসুম। ইউনাইটেড হাসপাতালের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা।

তার আগে গত ২৯ জানুয়ারি সুন্নতে খতনা করাতে গিয়ে রাজধানীর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে শিশু আয়ান আহমেদের মৃত্যুর ঘটনায় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের তদন্ত কমিটির রিপোর্ট লোক দেখানো (আইওয়াশ) ও হাস্যকর বলে মন্তব্য করেছিলেন হাইকোর্ট।

গত ৮ জানুয়ারি প্রথম প্রহরে (রাত ১টা) রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকা অবস্থায় শিশু আয়ান মারা যায়। টানা সাত দিন লাইফ সাপোর্টে ছিল আয়ান। এর আগে ২০২৩ সালের ৩০ ডিসেম্বর বাড্ডার সাতারকুলের ইউনাইটেড মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে আয়ানকে সুন্নতে খতনা করা হয়। তখন তাকে এনেসথেসিয়া দিয়ে অজ্ঞান করা হয়। এরপর মৃত্যু পর্যন্ত তার আর জ্ঞান ফেরেনি। ভুল চিকিৎসা এবং অবহেলার কারণে আয়ানের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ করে পরিবার। এ ঘটনায় বাড্ডা থানায় মামলা দায়ের করেন আয়ানের বাবা শামীম আহমেদ।

এমএইচডি/এসএসএইচ