বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার মিছিলে রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদকে গুলি করে হত্যা মামলায় সাবেক কৃষিমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ড. মো. আব্দুর রাজ্জাকের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। 

এছাড়া পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যার অভিযোগে রাজধানীর আদাবর থানার মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) ওয়াদুদ হত্যা মামলায় দুই দিনের রিমান্ড শেষে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। 

সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের রমনা জোনাল টিমের পুলিশ পরিদর্শক জাহাঙ্গীর আরিফ তাকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন। 

অপরদিকে আসামি পক্ষে আইনজীবীরা জামিন চেয়ে আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত তার জামিন নামঞ্জুর করেন। 

অপরদিকে বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের সময় পোশাকশ্রমিক রুবেল হত্যার অভিযোগে রাজধানীর আদাবর থানার মামলায় তাকে গ্রেপ্তার দেখাতে আবেদন করে পুলিশ। 
আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আলী হায়দার তাকে এ মামলায় গ্রেপ্তার দেখান। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।

এর আগে রাজধানীর ইস্কাটন এলাকা থেকে সোমবার রাত পৌনে ৮টার দিকে আব্দুর রাজ্জাককে গ্রেপ্তার করে ডিবি পুলিশ। 

গত ১৯ জুলাই বিকেল ৫টায় নিউমার্কেটের ১নং গেটের সামনে গুলিতে নিহত হন ব্যবসায়ী আব্দুল ওয়াদুদ। এ ঘটনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরসহ ১৩০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করা হয়। নিহত ব্যবসায়ীর শ্যালক আব্দুর রহমান বাদী হয়ে গত ২১ আগস্ট নিউমার্কেট থানায় এ মামলা করেন।

মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ১৯ জুলাই বিকেল ৫টায় নিউমার্কেটের ১নং গেটের সামনে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতার শান্তিপূর্ণ মিছিল চলছিল। এসময় কিছু আসামির যোগসাজশ ও উসকানিমূলক বক্তব্যে ও সরাসরি নির্দেশে নিরপরাধ মানুষের ওপর গুলি করা হলে ঘটনাস্থলে মাহফুজুর রহমান, নাসির উদ্দিন, শামীম উসমান, মো. আবু মূসা, মাঈনুদ্দিন, শাহাদাত হোসেন, আবির হোসেনসহ অনেক নিরস্ত্র ছাত্র-জনতা ও সাধারণ পথচারী আহত হন। আব্দুল ওয়াদুদ (৪৫) নিউমার্কেট থানার প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারে নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান থেকে বাসায় ফেরার পথে ঘটনাস্থলে গুলিবিদ্ধ হন। এরপর তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।

এদিকে, গত ২২ আগস্ট পোশাকশ্রমিক রুবেলের বাবা রফিকুল ইসলাম বাদী হয়ে আদাবর থানায় মামলাটি দায়ের করেন।

মামলার এজাহারে বাদী অভিযোগ করেন, গত ৫ আগস্ট রুবেল আদাবরের রিংরোডে ছাত্র-জনতার প্রতিবাদী মিছিলে অংশ নেন। এ সময় আসামিদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নির্দেশ, প্ররোচনা, সাহায্য, সহযোগিতা ও প্রত্যক্ষ মদদে মিছিলে গুলি ছুড়া হয়। এতে বুকে ও পেটে গুলিবিদ্ধ হন রুবেল। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ৭ আগস্ট মারা যান তিনি। 

মামলায় আসামির তালিকায় দল হিসেবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, বাংলাদেশ যুবলীগ, বাংলাদেশ স্বেচ্ছাসেবকলীগ, বাংলাদেশ শ্রমিকলীগ, বাংলাদেশ তাঁতীলীগ, বাংলাদেশ কৃষকলীগ, বাংলাদেশ মৎসজীবীলীগের নামও রয়েছে।

এনআর/এমএসএ