চট্টগ্রাম নগরের জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে ইসলামী ভাবধারার সংগীত পরিবেশনের ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠিয়েছেন আদালত। সোমবার (১৪ অক্টোবর) দুজনের জামিন এবং রিমান্ড আবেদন শুনানির দিন ধার্য ছিল।

এদিন চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. অলি উল্লাহর আদালতে আসামিপক্ষ এবং বাদীপক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আদালতের বিচারক মো. অলি উল্লাহ এজলাস ত্যাগ করেন।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সোমবার আদালতে দুজনের বিরুদ্ধে পুলিশের করা রিমান্ড আবেদনের শুনানির দিন ধার্য ছিল। পুলিশের সেই আবেদন বাতিল এবং আসামিদের জামিন আবেদন করেন তাদের আইনজীবীরা। বাদীপক্ষের একদল আইনজীবী আসামিদের রিমান্ড প্রদান এবং জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন।

প্রত্যক্ষদর্শী একজন আইনজীবী ঢাকা পোস্টকে বলেন, আসামিদের রিমান্ড আবেদন বাতিল ঘোষণা করেন আদালত। পরে আদালতে আসামিদের জামিন আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে আদালতে দুই পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে ব্যাপক বাকবিতণ্ডা হয়। এসময় আসামিপক্ষে অন্তত অর্ধশতাধিক আইনজীবী ছিলেন এবং বাদীপক্ষে ৮ থেকে ১০ জন আইনজীবী ছিলেন, যাদের সবাই সনাতন ধর্মাবলম্বী ছিলেন। দুই পক্ষের বাকবিতণ্ডার মধ্যে বিচারক এজলাস ছেড়ে চলে যান।

জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে জেএম সেন হল পূজামণ্ডপে ইসলামী ভাবধারার সংগীত পরিবেশন করে চট্টগ্রাম কালচারাল অ্যাকাডেমি নামে একটি সংগঠনের ছয় শিল্পী। এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়। এ ঘটনায় নগরের কোতোয়ালি থানায় শুক্রবার একটি মামলা হয়। এতে সংগীত পরিবেশনের সঙ্গে জড়িত ছয় শিল্পীর পাশাপাশি তাদের আমন্ত্রণকারী মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সজল দত্তকে আসামি করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম মহানগর পূজা উদযাপন পরিষদের অর্থ সম্পাদক সুকান্ত বিকাশ মহাজন বাদী হয়ে দায়ের করা মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগ করা হয়েছে। এতে আসামি হওয়া শিল্পীরা হলেন– শহীদুল করিম (৪২), মো. নুরুল ইসলাম (৩৪), আব্দুল্লাহ ইকবাল (৩০), মো. মামুন (২৭), গোলাম মোস্তফা (৩৬) ও রনি (২৮)।

তাদের মধ্যে শহিদুল করিম ও মো. নুরুল ইসলাম নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠান আদালত। গ্রেপ্তার শহিদুল করিম চট্টগ্রামের বেসরকারি তানজিমুল উম্মাহ মাদ্রাসার শিক্ষক এবং নুরুল ইসলাম দারুল ইরফান অ্যাকাডেমির শিক্ষক।

এমআর/এসএসএইচ