আদালতকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খান বলেছেন, সরকারের একজন সাধারণ কর্মকর্তা হয়ে অনেক নির্দেশ অমান্য করেছি। অবসরে যাওয়ার পর কোনো ধরনের লাভজনক পদে চাকরি করিনি। 

সোমবার (৭ অক্টোবর) যুবদল নেতা শামীম হত্যা মামলায় রিমান্ড শুনানিতে আদালতে এ কথা বলেন তিনি। 

এ দিন বিকেলে তাকে আদালতে হাজির করা হয়। এরপর মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তদন্ত কর্মকর্তা পল্টন মডেল থানার উপ-পরিদর্শক তন্ময় কুমার বিশ্বাস তার ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। 

এ সময় রাষ্ট্রপক্ষে ডিএমপির প্রসিকিউশন বিভাগের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল ইসলাম খানের রিমান্ড চান। তিনি আদালতকে বলেন, তাকে এ মামলায় সন্দিগ্ধ আসামি হিসেবে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মামলার সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে তাকে রিমান্ডে নেওয়া প্রয়োজন। 

রাষ্ট্রপক্ষে সহযোগিতা করে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকী বলেন, এই আসামি ফ্যাসিস্ট সরকারের সহযোগী। তাকে জননিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে দেওয়া হলে তিনি নিরাপত্তা তো দূরের কথা, জনগণকে ভয়ের রাজ্যে রাখার জন্য যা যা করার দরকার তাই করেছেন। অবৈধ সরকারের ১৫ বছরে তার মতো কর্মকর্তারা যত অনিয়ম আছে সব করেছেন। 

এ সময় তিনি আসামির সর্বোচ্চ রিমান্ড প্রার্থনা করেন। 

এরপর আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন সাবেক সিনিয়র সচিব আমিনুল। তিনি বলেন, আমি এই সরকারের আমলে ১৫ বছর না, নয় বছর চাকরি করেছি। ২০১৪ সালের ১ এপ্রিল থেকে ২০২৩ সালের ৩০ মার্চ পর্যন্ত চাকরিতে ছিলাম। আর জননিরাপত্তা বিভাগে ছিলাম মাত্র পাঁচ মাস। সরকারের একজন সাধারণ কর্মকর্তা হয়ে অনেক নির্দেশ অমান্য করেছি। অবসরে যাওয়ার পর কোনো ধরনের লাভজনক পদে চাকরি করিনি। 

এ সময় এজলাসে থাকা বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা চিৎকার শুরু করলে তিনি আর কথা বলেননি। এরপর ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত তার তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

২০২৩ সালের ২৮ অক্টোবর বিএনপি কেন্দ্রীয় কর্মসূচি অনুযায়ী মহাসমাবেশ ডাকে। ওই মহাসমাবেশকে পণ্ড করার জন্য একই দিনে আওয়ামী লীগ পাল্টা সমাবেশ ডাকে। পুলিশের সহায়তায় মহাসমাবেশে বিএনপি নেতাকর্মীদের ওপর হামলা চালানো হয়। এতে বিএনপির অনেক নেতাকর্মী আহত হন। যুবদল নেতা শামীম মারা যান। এ ঘটনায় গত ২৪ সেপ্টেম্বর রাজধানীর পল্টন থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়।

এর আগে, গতকাল বিকেলে বনানী থেকে আমিনুল ইসলাম খানকে গ্রেপ্তার করা হয়।

এনআর/কেএ