বিএনপির সাবেক এক এমপিকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা মামলায় গ্রেপ্তার ভোলা-৪ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আব্দুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের মুক্তি চেয়ে ঢাকার আদালতে মিছিল করেছেন তার অনুসারীরা। এই মামলায় ৫ দিনের রিমান্ড পাওয়া জ্যাকব এমপি থাকাকালে এলাকার সর্বোচ্চ উন্নয়ন করেছেন বলে আদালতের কাছে দাবি করেছেন।

মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) ঢাকার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট রাবেয়া সুলতানার আদালতে প্রায় এক যুগ আগে সাভারে বিএনপির সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) নাজিম উদ্দিন আলমকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার মামলায় রিমান্ড শুনানিতে তিনি একথা বলেন।

এদিন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক জহুরুল ইসলাম তার সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন। রাষ্ট্রপক্ষও সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুরের প্রার্থনা করেন। রাষ্ট্রপক্ষে সহযোগিতাকারী বিএনপিপন্থি আইনজীবী ওমর ফারুক ফারুকীও রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন।

তিনি বলেন, কয়েকবার ভোট চুরি, ভোট হরণ, কেন্দ্র দখল করে নিজেকে এমপি ঘোষণা করেন জ্যাকব। এলাকায় সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেন। ভিন্ন দলের কাউকে রাজনীতি করার সুযোগ দিতেন না। ঢাকায় এসেও বিরোধীদের পথসভা ও মিছিল-মিটিংয়ে হামলা চালাতেন।

আদালতে আসামিপক্ষের আইনজীবী বলেন, বাদী এবং আসামির বাড়ি একই আসনে। একই সংসদীয় আসনের হওয়ায় হিংসার বশবর্তী হয়ে একজনের ক্রোধ আরেকজনের ওপর মেটাতে মামলা দিয়েছেন। ঘটনার সময় বিবাদী উপস্থিত ছিলেন না। সেখানে অংশগ্রহণ করেননি এবং তার কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। রিমান্ডে নেওয়ার কোনো যৌক্তিকতা নেই। দরকার হলে পুলিশ তাকে জেলগেটে জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে। 

জবাবে রাষ্ট্রপক্ষে সহযোগিতাকারী আইনজীবী ওমর ফারুক বলেন, আসামি কী ধরনের লোক! আজ বৈরী পরিবেশেও তার লোকজন আদালতে এসে স্লোগান দেয়। আর যখন ক্ষমতায় ছিল তখন কি করেছে?

পরে আদালত জ্যাকবের বক্তব্য শুনতে চান। জ্যাকব বলেন, ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে নির্বাচন করে ভোলা-৪ আসন থেকে এমপি নির্বাচিত হই। আমি রাজনৈতিক পরিবারের সন্তান। আমার বাবা একাধিকবার এমপি ছিলেন, বাবার আদর্শ ধারণ করে রাজনীতি করে এসেছি। এমপি থাকাকালে এলাকার সর্বোচ্চ উন্নয়ন করেছি। আমি কখনো ঢাকায় মিছিল-মিটিং করিনি। মনোনয়ন সংগ্রহ করতে গিয়েও মিছিল-মিটিং করিনি। এই আন্দোলনের সময় আমার নির্বাচিত এলাকায় কোনো ধরনের সংঘর্ষ, সহিংসতা হয়নি। পরে আদালত তার ৫ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। 

এর আগে সোমবার দিবাগত শেষরাত সাড়ে ৩টার দিকে গুলশান থেকে জ্যাকবকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরদিন মঙ্গলবার সকালে তাকে আদালতে হাজির করা হলে সিজেএম আদালতের হাজতখানায় রাখা হয়।

এদিন সকাল থেকেই আদালতপ্রাঙ্গণে তার অনুসারী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা এসে হাজির হতে শুরু করেন। দুপুরে রিমান্ড শুনানিকালে এজলাসে তোলার সময় তার অনুসারী ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন। জ্যাকবের মুক্তির দাবি জানান। সেখান থেকে বের হয়ে আদালতের সামনে এসেও স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের। এরপর বিএনপিপন্থি কয়েকজন আইনজীবী তাদের থামাতে উদ্যত হন। পরে আদালতে শুনানি শুরুর আগে পুলিশের ওপর ক্ষোভ প্রকাশ করেন বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা।

এনআর/এমজে