রোববার রাতে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় বেশ কয়েকজন আনসার সদস্যকে আটক করা হয় (ছবি : সংগৃহীত)

চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে সচিবালয় অবরুদ্ধ করে ভাঙচুর ও হামলার ঘটনায় রাজধানীর চার থানার মামলায় গ্রেপ্তার ৩৮৮ আনসার সদস্যকে কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেছে পুলিশ। রমনা, শাহবাগ, পল্টন ও বিমানবন্দর থানার চার মামলায় তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করা হয়েছে।

সোমবার (২৬ আগস্ট) ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মোশাররফ হোসেনের আদালতে এ বিষয়ে শুনানি অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।

আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা সূত্রে জানা গেছে, শাহবাগ থানার মামলায় গ্রেপ্তার ১৮৯ জন, রমনা থানায় ৯৮ জন, পল্টন থানায় ৯৫ জন ও বিমানবন্দর থানার মামলায় ছয়জন আনসার সদস্যকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে আদালতে আনা হয়। এ চার থানার মামলায় অন্তত ৪২৬ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়। এছাড়া, অন্তত ১০ হাজার অজ্ঞাতনামা আনসার সদস্যদের আসামি করা হয়েছে।

এসব মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ২৫ আগস্ট রাত ৯টার দিকে সচিবালয়ের সামনে সাধারণ আনসার ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া শুরু হয়। এসময় কিছু আনসার সদস্য পল্টন মডেল থানাধীন জিরো পয়েন্ট এলাকায় চাকরি জাতীয়করণসহ বিভিন্ন দাবিতে রাজপথ অবরোধ করে রাখেন। পুলিশ তাদের ঘটনাস্থল থেকে চলে যাওয়ার জন্য অনুরোধ করে। তারা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুরোধ অমান্য করে রাস্তা অবরোধের মাধ্যমে যানচলাচলের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করেন।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য উপদেষ্টারা তাদের দাবি-দাওয়ার প্রতি পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে দ্রুত বাস্তবায়নের লক্ষ্যে সাধারণ আনসারদের পক্ষে কয়েকজন প্রতিনিধির সঙ্গে তাৎক্ষণিক বৈঠক করেন এবং আংশিক দাবি পূরণ করেন। এছাড়া, অন্যান্য যৌক্তিক দাবিগুলো একটি কমিটি গঠন করে দ্রুততম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়নে আশ্বাস দেন।

কিন্তু সাধারণ আনসাররা স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে বাংলাদেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা বাংলাদেশ সচিবালয়ের চারপাশে অবস্থান করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টাসহ অন্যান্য কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখেন। তারা জিরো পয়েন্টসহ গুরুত্বপূর্ণ সড়কে অবরোধ করে দাবি দাওয়া পূরণ না হওয়া পর্যন্ত অবস্থান করবে মর্মে বিভিন্ন স্লোগান দিতে থাকেন।

বাংলাদেশের সাধারণ আনসাররা একটি সু-শৃঙ্খলিত আনসার বাহিনীর সদস্য। বাংলাদেশ সচিবালয় রাষ্ট্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান তথা কেপিআই জানা সত্ত্বেও আনসার সদস্যরা কোনো অসৎ উদ্দেশ্যে অবস্থান করতে থাকেন। একপর্যায়ে রাত্র ৯.৩০ মিনিটে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা ঘটনাস্থলে এলে আনসার সদস্যরা তাদের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে। এতে অসংখ্য পথচারী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনকারীরা গুরুতর আহত হন। আনসার সদস্যরা রাস্তার ওপর আগুন ধরিয়ে দেন এবং রাস্তায় চলাচলরত বিভিন্ন গাড়ি ভাঙচুর করতে থাকেন।

এসব মামলায় আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৪৩/১৪৭/১৪৮/১৪৯/১৮৬/৩২৩/ ৩২৫/৩৫৩/৪২৭/৪৩৫/৪৩৬/১০৯/১১৪/৩৪ ধারায় পরস্পর যোগসাজশে বেআইনিভাবে জনতাবদ্ধ হয়ে পুলিশের কাজে বাধা, অগ্নি-সংযোগ ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে গাড়ি ভাঙচুর করার অভিযোগ আনা হয়েছে। 

এনআর/কেএ