মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর ক্ষেত্রে অনিয়ম, দুর্নীতি ও অর্থপাচারের অভিযোগ তদন্ত করতে দুর্নীতি দমন কমিশনক (দুদক) ও বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটকে (বিএফআইইউ) নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। লিখিত আদেশ পাওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে সংস্থা দুটিকে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

বুধবার (২১ আগস্ট) এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি নিয়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি শশাঙ্ক শেখর সরকারের হাইকোর্ট বেঞ্চ রুলসহ এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী মো. নাজিমুদ্দীন ও মো. আবুল কাশেম সেলিম।

মালয়েশিয়ায় কর্মী পাঠানোর প্রক্রিয়া সিন্ডিকেটমুক্ত করতে এবং সব রিক্রুটমেন্ট এজেন্সির অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নিষ্ক্রিয়তাকে কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, জানতে চাওয়া হয়েছে রুলে। সেই সঙ্গে গমনেচ্ছু কর্মীদের থেকে নির্ধারিত ব্যয়ের কয়েকগুন বেশি টাকা নেওয়ার সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণে নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছে।

এ ছাড়া মালয়েশিয়া যেতে আগ্রহী কর্মীদের কাছ থেকে অতিরিক্ত টাকা আদায় বন্ধে একটি পরিপূর্ণ নীতিমালা বা নির্দেশিকা তৈরির নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না এবং সব প্রক্রিয়া শেষে চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও মালয়েশিয়া যেতে না পারা ব্যক্তিদের ক্ষতিপূরণ দিতে কেন নির্দেশ দেওয়া হবে না, রুলে তাও জানতে চেয়েছেন আদালত। বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ের সচিব, পররাষ্ট্র সচিব, বাণিজ্য সচিব, দুদক চেয়ারম্যান, বিএফআইউ প্রধান, জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালককে চার সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।

জনশক্তি রপ্তানিকারক এজেন্সি মেসার্স ইউনাইটেড এক্সপোর্ট লিমিটেডের স্বত্ত্বাধিকারী এস এম রফিকের পক্ষে গত ১৫ জুলাই এ রিট আবেদনটি করা হয়।

২০০৯ সালে প্রথম দফায় বন্ধ হয় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। এরপর ২০১৬ সালের শেষে তা আবার খোলা হয় বাজারটি। তখন বাংলাদেশের ১০টি রিক্রুটিং এজেন্সি চক্র গড়ে উঠেছিল। দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর থেকে আবার বন্ধ হয়ে যায় মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। ২০২২ সালে আবার মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার খোলে।

চলতি বছর মার্চে মালয়েশিয়া জানায়, দেশটি আপাতত আর শ্রমিক নেবে না। যাঁরা অনুমোদন পেয়েছেন, ভিসা পেয়েছেন, তাঁদের ৩১ মের মধ্যে মালয়েশিয়ায় ঢুকতে হবে। ১ জুন থেকে বন্ধ হয়ে যাবে মালয়েশিয়ার শ্রমবাজার। আপাতত নতুন করে কোনো কর্মী যেতে পারবেন না দেশটিতে।

বাংলাদেশ জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) থেকে রিক্রুটিং এজেন্সিগুলো ৪ লাখ ৯৩ হাজার ৬৪২ কর্মীর ছাড়পত্র নিয়েছে। এর মধ্যে ৪ লাখ ৭৬ হাজার ৬৭২ কর্মী মালয়েশিয়ায় গেছেন। বাকিরা যেতে পারেননি। চূড়ান্ত ছাড়পত্র নিয়েও কয়েক হাজার কর্মী মালয়েশিয়া যেতে না পারা নিয়ে দেশের প্রায় সব সংবাদ মাধ্যম খবর-প্রতিবেদন প্রকাশ করে।

এমএইচডি/এসএম