ঢাকার চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরানো হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ এবং মহানগর দায়রা জজ আদালতের এজলাসে থাকা লোহার খাঁচাও সরানো হবে বলে জানিয়েছেন আদালত সংশ্লিষ্টরা।

শনিবার (১৭ আগস্ট) চীফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের এক কর্মকর্তা ঢাকা পোস্টকে বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ঢাকার আদালতের কয়েকটি এজলাস কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলা হচ্ছে। পর্যায়ক্রমে সব আদালতের খাঁচা সরিয়ে ফেলা হবে। গণপূর্ত বিভাগের লোকজন লোহার খাঁচা সরানের কাজটি করছেন।

তিনি জানান, গতকাল ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতের দুজন ম্যাজিস্ট্রেটের আদালত কক্ষ থেকে লোহার খাঁচা সরানো হয়েছে।

আদালত সংশ্লিষ্ট সূত্র বলছে, উচ্চপর্যায় থেকে লোহার খাঁচা সরিয়ে ফেলার নির্দেশনা পাওয়ার পর থেকে ঢাকার সিএমএম আদালতের কয়েকটি আদালত থেকে লোহার খাঁচা সরানো হয়।

ঢাকা জেলা ও দায়রা জজ আদালতের নাজির খাদেমুল ইসলাম ঢাকা পোস্টকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

একই কথা জানিয়েছেন মহানগর দায়রা জজ আদালতের নাজির মামুন শাহ।

প্রসঙ্গত, ঢাকার আদালতের লোহার খাঁচা নিয়ে কয়েক মাস আগে থেকে অসন্তোষ প্রকাশ করে আসছেন বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।

গত ১২ জুন তিনি সাংবাদিকদের বলেছিলেন, ‘আজ আমরা অনেকক্ষণ খাঁচার (আসামির কাঠগড়া) মধ্যে ছিলাম। আমি যত দূর জানি, যত দিন আসামি অপরাধী হিসেবে দোষী সাব্যস্ত না হচ্ছে তত দিন তিনি নিরপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবেন। একজন নিরপরাধ নাগরিককে শুনানির সময় লোহার খাঁচায় (আসামির কাঠগড়া) দাঁড়িয়ে থাকতে হবে এটা আমার কাছে অত্যন্ত অপমানজনক। এটা গর্হিত কাজ। এটা কারও ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য না। একটা পর্যালোচনা হোক। একটা সভ্য দেশে কেন একজন নাগরিককে শুনানির সময় পশুর মতো দাঁড়িয়ে থাকতে হবে? যেখানে তিনি তখনো দোষী সাব্যস্ত হননি।’

দেশের অধ্বঃস্তন আদালত কক্ষে থাকা লোহার খাঁচা অপসারণের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের ১০ আইনজীবী। সে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট গত ৪ ফেব্রুয়ারি রুলসহ আদেশ দিয়েছিলেন।

রিটের পক্ষের আইনজীবী শিশির মনির বলেন, সারাদেশে অধস্তন আদালত কক্ষে কতগুলো লোহার খাঁচা রয়েছে সে বিষয়ে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশ দিয়েছিলেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে হাইকোর্ট তার রুলে আদালত কক্ষে লোহার খাঁচার পরিবর্তে কাঠগড়া পুনঃস্থাপনের নির্দেশ কেন দেওয়া হবে না তা জানতে চেয়েছিলেন। এছাড়া আদালত কক্ষে লোহার খাঁচা বসানো কেন সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩১, ৩২ ও ৩৫ এর সঙ্গে সাংঘর্ষিক হবে না রুলে তাও জানতে চাওয়া হয়েছিল।

এনআর/এমএসএ