সরকারি ১৪ কোটি টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছেন— এমন অভিযোগে আলোচিত জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলামসহ ১২ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। 

যদিও ভূমি অধিগ্রহণের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি সেতাফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার ও মামলা করেছিল দুদক। এর পরপরই কিশোরগঞ্জের জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের অডিটর মো. সৈয়দুজ্জামানের বাসা থেকে ৯২ লাখ টাকা উদ্ধার করেছিল দুদকের তদন্ত দল। যা চার্জশিট হয়ে বর্তমানে আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এবারের মামলায় প্রায় চার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ আনা হয়েছে। মঙ্গলবার (৯ জুলাই) কিশোরগঞ্জ সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে সংস্থাটির (দুদক) সহকারী পরিচালক মাহাথীর মুহাম্মদ সামী বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন। 

মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, আসামি মো. সেতাফুল ইসলাম ২০১৬ সালে ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্বপালনকালে এলএ চেক গ্রহণকারী ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগসাজশে প্রতারণা ও জালিয়াতির আশ্রয় নিয়ে বিধিবহির্ভূতভাবে কাজ করেছেন। ক্ষমতার অপব্যবহার এবং ভুয়া কাগজপত্র তৈরি করে কিশোরগঞ্জের জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের মাধ্যমে তিন কোটি ৭৯ লাখ টাকা আত্মসাৎ করেন। 

মামলার আসামিরা হলেন- জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের সাবেক ভূমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা মো. সেতাফুল ইসলাম, জেলা হিসাবরক্ষণ কার্যালয়ের সাবেক অডিটর মো. সৈয়দুজ্জামান, ক্ষতিপূরণের টাকার সুবিধাভোগী আব্দুল্লাহ্ আল মামুন, কে এ আল মামুন, মো. কামরুজ্জামান, মো. জাহাঙ্গীর আলম, মো. আনিছুর রহমান, মোহাম্মদ মাহমুদ হোসেন শিমুল, রায়হান উদ্দিন, জিলন খাঁন, আবুল কালাম ও আবদুল হামিদ। 

আসামিদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৪২০/৪০৯/৪৬৭/৪৬৮/৪৭১/৪৭৭(ক)/১০৯ ধারাসহ দুর্নীতি প্রতিরোধ আইন ১৯৪৭-এর ৫(২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে। 

এর আগে ভূমি অধিগ্রহণের পাঁচ কোটি টাকা আত্মসাতের ঘটনায় ২০১৯ সালের জুলাই মাসে সেতাফুল ইসলামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করা হয়েছিল। ২০১৮ সালের ১৭ জানুয়ারি তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের এবং তাকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়। 

এ মামলায় সেতাফুল ছাড়া চার্জশিটভুক্ত অন্য আসামিরা হলেন- কিশোরগঞ্জের জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মো. সিরাজুল ইসলাম, সাবেক সুপার (বর্তমানে নিরীক্ষা ও হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা, হিসাব ও সিডিপিইউ শাখা, হিসাব মহানিয়ন্ত্রক কার্যালয়, সেগুনবাগিচা, ঢাকা) মোহাম্মদ গোলাম হায়দার, অডিটর মো. সৈয়দুজ্জামান, অফিস সহায়ক মো. দুলাল মিয়া, সোনালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার সাবেক এজিএম (বর্তমানে অ্যাসিস্ট্যান্ট জেনারেল ম্যানেজার, সোনালী ব্যাংক, জেনারেল ম্যানেজার’স অফিস, ময়মনসিংহ) মো. মাহবুবুল ইসলাম খান, পূবালী ব্যাংক কিশোরগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক মুখলেছুর রহমান, মেসার্স সাদিয়া এন্টারপ্রাইজের প্রোপ্রাইটর মো. আমিনুল ইসলাম ও রাজধানীর ডেমরা থানা এলাকার বাসিন্দা মো. জাহাঙ্গীর আলম। 

তদন্তকারী কর্মকর্তা ছিলেন দুদকের সহকারী পরিচালক মো. আবদুল ওয়াদুদ। 

আরএম/এমএআর/