অভিযুক্ত ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ হোসেন শাহদাত/ ছবি : সংগৃহীত

কক্সবাজার বেড়াতে গিয়ে ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগে সাবেক কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা ফুয়াদ হোসেন শাহদাতের বিরুদ্ধে ঢাকার আদালতে মামলা দায়ের করেন ইডেন কলেজের সাবেক এক ছাত্রলীগ নেত্রী। সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে সাইবার নিরাপত্তা আইনে পাল্টা মামলার আবেদন করেছিলেন ফুয়াদ। কিন্তু মামলা গ্রহণের উপাদান না থাকায় আদালত তা খারিজ করে দিয়েছেন।

মঙ্গলবার (২ জুলাই) ফুয়াদ হোসেন ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালে হাজির হয়ে সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে হয়রানির অভিযোগে মামলার আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াত বাদীর জবানবন্দি রেকর্ড করে আদেশ পরে দেবেন বলে জানান। বাদীর নথি পর্যালোচনা করে মামলা গ্রহণের উপাদান না থাকায় আদালত তার আবেদন খারিজ করে দেন।

উল্লেখ্য, গত ২৭ জুন ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৫ এ বাদী হয়ে মামলার আবেদন করেন ইডেন কলেজ ছাত্রলীগ নেত্রী। আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে হাজারীবাগ থানার অফিসার ইনচার্জকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।

মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, ভিকটিম ২০১৩-১৪ সেশনে ইডেন মহিলা কলেজে ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং সেকশনে ভর্তি হন। ২০১৪ সালে বান্ধবীদের নিয়ে টিএসসিতে আড্ডা দিতে যান। সেখানে গিয়ে ফুয়াদ হোসেনের সঙ্গে পরিচয় হয়। তারা ফোন নম্বর আদান প্রদান করেন। তাদের ফোনে কথাবার্তা হয়। এরপর তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। তারা বিভিন্ন জায়গা একসঙ্গে ঘোরাফেরা করেন। ২০১৬ সালের ২১ আগস্ট তারা কক্সবাজার ঘুরতে যান। সেখানে গিয়ে বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে আসামি ফুয়াদ ভিকটিমকে ধর্ষণ করেন। পরদিন তার শরীয়াহ মোতাবেক বিয়ে করে। 

অভিযোগে আরও বলা হয়, ২০১৯ সালে ভিকটিম গর্ভবতী হয়ে পড়লে আসামিকে ফোন/হোয়াটসঅ্যাপে জানালে আসামি বাচ্চা নষ্ট করার কথা বলে। ভিকটিম এতে রাজি না হলে ওই বছরের ২৩ নভেম্বর রাতে ভিকটিমের বাচ্চা নষ্ট হওয়া ওষুধ মিশিয়ে জুস খেতে দেয়। জুস খাওয়ার পরে ভিকটিম অসুস্থ হয়ে পড়লে বাচ্চা নষ্ট হয়ে যায়। পরবর্তীতে আসামি ভিকটিমকে বিয়ে রেজিস্ট্রি প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় ঢাকার বিভিন্ন স্থানে নিয়ে ধর্ষণ করে। 

২০২২ সালের মার্চ মাসে ভিকটিম বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য আসামিকে চাপ দিলে আসামি জানায় ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ২০২২ সালে সম্মেলন শেষ হলে বিয়ের রেজিস্ট্রি করব। ২০২২ সালে আসামি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি পদ পায়। আসামির এই ধরনের কর্মকাণ্ডের জন্য ভিকটিম আসামির নিকটতম লোকজনের সাথে যোগাযোগ করলে জানায় যে, আসামি অন্য একজনের সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছে। চলতি বছরের ৩ জানুয়ারি ভিকটিমকে আবারও ধর্ষণ করেন সেই ছাত্রলীগ নেতা। এ সময় আসামিকে বিয়ে রেজিস্ট্রি করার জন্য চাপ দিলে ভিকটিমকে মারধর করে জীবননাশের হুমকি দিয়ে বাসা থেকে বের করে দেয়।

পরবর্তীতে আসামি ফুয়াদ ১ জুলাই উচ্চ আদালত থেকে ৬ সপ্তাহের আগাম জামিন পান। আগাম জামিন পাওয়ার পরদিনই হয়রানির অভিযোগে সেই নেত্রীর বিরুদ্ধে পাল্টা মামলার আবেদন করেন। 

এনআর/এসকেডি