আদালতের এজলাস কক্ষে বসে আছে ছয় বছরের শিশু। সে বনশ্রীর একটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রথম শ্রেণিতে পড়ে। বাবার দায়ের করা রিটের পরিপ্রেক্ষিতে শিশুকে নিয়ে আদালতে হাজির হন নারী উদ্যোক্তা মা।

বৃহস্পতিবার (৬ জুন) বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হকের হাইকোর্ট বেঞ্চে রিটের শুনানি হয়। শুনানির শুরুতে বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দার শিশুকে কাছে ডেকে নেন। আদর করে শিশুর নাম, কোন শ্রেণিতে পড়ে তা জেনে নেন।

এরপর একে একে শিশুর হাতে তিনটি চকলেট তুলে দেন বিচারপতি। শিশুর মাথায় থাকা রঙিন ক্যাপটি নিজের মাথায় পড়ে বিচারপতি নাইমা হায়দার বলেন, তুমি তো স্পাইডারম্যান। আদালতে উপস্থিত সবাই বিচারপতি ও শিশুর খুনশুটি দেখে অবাক হন।

হাইকোর্ট শিশুর বাবা ও মাকে উদ্দেশ্য করে বলেন, শিশুর সঙ্গে যেন তার বাবা মাসে দুইদিন সময় কাটাতে পারেন, সেই নির্দেশনা দিচ্ছি। আদালত বলেন, শিশুর মানসিক বিকাশের জন্য বাবা-মা দুইজনের ভালোবাসার প্রয়োজন।

আদালতে শিশুর বাবার পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ শিশির মনির। শিশুর মায়ের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট হুমায়ন কবির শিকদার।

আইনজীবীরা বলেন, রাজধানীর উত্তরার বাসিন্দা রবি আজিয়াটার এক কর্মকর্তার সঙ্গে বিয়ে হয় বনশ্রীর বাসিন্দা এক নারী উদ্যোক্তার। ২০১৮ সালে এ দম্পতির পুত্র সন্তান হয়।  ২০১৯ সালে তাদের ডিভোর্স হয়ে যায়। এরপর থেকে বনশ্রীতে মায়ের সঙ্গে শিশুটি রয়েছে। এরই মধ্যে শিশুর বাবা-মা উভয়েই অন্য জায়গায় বিয়ে করেছেন। শিশুর মায়ের আইনজীবীর অভিযোগ, শিশুর এক বছর বয়সের পর থেকে বাবা শিশুর সঙ্গে কোনো যোগাযোগ রাখেননি, ভরণপোষণও দেননি।

শিশুর বাবার আইনজীবী বলেন, গত মাসে শিশুকে দেখতে পায়নি তার বাবা। এ কারণে হাইকোর্টে হেবিয়াস কর্পাস রিট করেন তিনি। রিটের শুনানি নিয়ে মে মাসের শেষ সপ্তাহে হাইকোর্ট সন্তানসহ মাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার সন্তানকে নিয়ে মা আদালতে হাজির হন।

এমএইচডি/এসএসএইচ