বাম থেকে আসামি শিমুল ভূইয়া, শিলাস্তি রহমান, তানভীর ভূইয়া / কোলাজ / সংগৃহীত

ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য (এমপি) আনোয়ারুল আজীম আনারকে খুনের উদ্দেশ্য অপহরণের মামলায় গ্রেপ্তার ও পলাতক দশ আসামির ব্যাংক অ্যাকাউন্টের তথ্য চেয়ে আদালতে আবেদন করেছে ডিবি পুলিশ। 

সোমবার (৩ জুন) ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে এ আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) সহকারী কমিশনার মাহফুজুর রহমান।

আসামিরা হলেন- শিমুল ভূইয়া, শিলাস্তি রহমান, তানভীর ভূইয়া, আক্তারুজ্জামান শাহীন, মো. সিয়াম হোসেন, মোস্তাফিজুর রহমান, ফয়সাল আলা সাজী, চেলসি চেরী, তাজ মোহাম্মদ খান ও মো. জামাল হোসেন।

আবেদনে গোয়েন্দা পুলিশ উল্লেখ করেন, মামলার মূল রহস্য উদ্‌ঘাটন ও সুষ্ঠু তদন্তের স্বার্থে গ্রেপ্তার-পলাতক আসামিদের এনআইডি ও পাসপোর্ট নম্বরের বিপরীতে কোন ব্যাংকে কয়টা অ্যাকাউন্ট আছে, তার তথ্য সরবরাহের জন্য হেড অব বাংলাদেশ, এফআইইউ (বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট) বরাবর আদেশ প্রদান করতে আদালতের সদয় মর্জি হয়।

শুনানি শেষে আদালত ডিবির আবেদনটি মঞ্জুর করেন। সংশ্লিষ্ট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর তাপস কুমার পাল ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এর আগে রোববার এ মামলায় নেপালে অবস্থান করা আসামি মো. সিয়াম হোসেনের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন আদালত।

আদালতে শেরেবাংলা নগর থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) জালাল উদ্দিন ঢাকা পোস্টকে জানান, গতকাল রোববার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা আসামি সিয়ামের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারির আবেদন করেন। তার আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার অতিরিক্ত চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মাহবুবুল হকের আদালত এ আদেশ দেন।

গত ২২ মে রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় খুন করার উদ্দেশ্যে অপহরণের অভিযোগে মামলাটি দায়ের করেন এমপি আনারের মেয়ে মুমতারিন ফেরদৌস ডরিন।

মামলার অভিযোগে মুনতারিন ফেরদৌস ডরিন উল্লেখ করেছেন, মানিক মিয়া এভিনিউয়ের বাসায় আমরা সপরিবারে বসবাস করি। ৯ মে রাত ৮টার দিকে আমার বাবা আনোয়ারুল আজিম আনার গ্রামের বাড়ি ঝিনাইদহ যাওয়ার উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। ১১ মে বিকেল পৌনে ৫টার দিকে বাবার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বললে বাবার কথাবার্তায় কিছুটা অসংলগ্ন মনে হয়। এরপর বাবার মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিলেও বন্ধ পাই।

১৩ মে বাবার ভারতীয় নম্বর থেকে উজির মামার হোয়াটসঅ্যাপে একটি ক্ষুদে বার্তা আসে। এতে লেখা ছিল, ‘আমি হঠাৎ করে দিল্লি যাচ্ছি, আমার সঙ্গে ভিআইপি রয়েছে। আমি অমিত সাহার কাজে নিউটাউন যাচ্ছি। আমাকে ফোন দেওয়ার দরকার নাই। আমি পরে ফোন দেব।’ এছাড়া আরও কয়েকটি বার্তা আসে। ক্ষুদে বার্তাগুলো আমার বাবার মোবাইল ফোন ব্যবহার করে অপহরণকারীরা করে থাকতে পারে।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, বিভিন্ন জায়গায় বাবার খোঁজ করতে থাকি। কোনও সন্ধান না পেয়ে তার বন্ধু গোপাল বিশ্বাস বাদী হয়ে ভারতীয় বারানগর পুলিশ স্টেশনে সাধারণ ডায়েরি করেন। এরপরও আমরা খোঁজাখুজি অব্যাহত রাখি। পরবর্তী সময়ে বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জানতে পারি অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিরা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পরস্পর যোগসাজসে বাবাকে অপহরণ করেছে।

এনআর/এমজে