ভিকারুননিসার ১৬৯ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল, অনিয়ম তদন্তের নির্দেশ
রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রথম শ্রেণির ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তিতে দুর্নীতি ও অনিয়মের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে ওই ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তি বাতিল থাকবে এবং অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করতে হবে বলে নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
ভর্তির সময় হওয়া দুর্নীতি ও অনিয়ম তদন্তের জন্য শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিবের নেতৃত্বে একটি কমিটি গঠন করে দিয়েছেন উচ্চ আদালত। কমিটিতে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যানের একজন প্রতিনিধি এবং বুয়েটের একজন আইটি এক্সপার্টকে রাখতে বলা হয়েছে।
বিজ্ঞাপন
এ বিষয়ে জারি করা রুল নিষ্পত্তি করে মঙ্গলবার বিচারপতি জে বি এম হাসান ও বিচারপতি রাজিক আল জলিলের হাইকোর্ট বেঞ্চ রায় দেন।
রায়ে আদালত বলেছেন, ১৬৯ শিশুর ভর্তি নিয়ে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাতে অভিভাবকরা দায় এড়াতে পারেন না।
আদালতে রিট আবেদনকারীদের পক্ষে ছিলেন ব্যারিস্টার মোস্তাফিজুর রহমান খান, ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও আইনজীবী শামীম সরদার। ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী মোহাম্মদ রাফিউল ইসলাম। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কাজী মাঈনুল হাসান।
আরও পড়ুন
ভিকারুননিসায় ভর্তি নিয়ে বয়সের নিয়ম না মানার অভিযোগ এনে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তিচ্ছু দুই শিক্ষার্থীর মা গত ১৪ জানুয়ারি হাইকোর্টে রিট করেন। প্রাথমিক শুনানি নিয়ে ২৩ জানুয়ারি হাইকোর্ট রুলসহ আদেশ দেন। আদালতের নির্দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তর (মাউশি) এ বিষয়ে একটি স্মারক হাইকোর্টে উপস্থাপন করে।
মাউশির ওই স্মারক মতে, ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজ কর্তৃপক্ষ ২০২৪ শিক্ষাবর্ষে প্রথম শ্রেণিতে ভর্তির ক্ষেত্রে বয়সের ঊর্ধ্বসীমা অনুসরণ করেনি। ১ জানুয়ারি ২০১৭ সালের আগে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীদের ভর্তি করার প্রক্রিয়া ছিল বিধিবহির্ভূত। এভাবে ভর্তি হওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ২০১৬ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১৫৯ জন এবং ২০১৫ সালে জন্মগ্রহণকারী শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১০ জন। মোট ১৬৯ জন। এসব শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করে মাউশিকে অবহিত করার অনুরোধ করা হয়।
মাউশির নির্দেশে স্কুল কর্তৃপক্ষ ১৬৯ জনের ভর্তি বাতিল করে।
এরপর গত ৬ মার্চ হাইকোর্ট আদেশ দেন অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে এক সপ্তাহের মধ্যে শূন্য আসনে ভর্তি নেওয়া হোক।
ওই আদেশের বিরুদ্ধে ভর্তি বাতিল হওয়া শিক্ষার্থীর অভিভাবকরা আপিল বিভাগে আবেদন করেন। আপিল বিভাগ গত ২০ মার্চ হাইকোর্টের জারি করা রুলটি ২ মাসের মধ্যে নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন এবং ১৬৯ ছাত্রীর ভর্তির ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন।
রুল নিষ্পত্তি করে রায় দেওয়ার মাধ্যমে আজ ওই স্থিতাবস্থা কেটে গেল। এখন হাইকোর্টের রায় বাস্তবায়ন করবে স্কুল কর্তৃপক্ষ।
এমএইচডি/এসকেডি