সাবেক নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নামে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি পেজ খোলেন নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার আইয়ুব খান। সেই পেজটি হ্যাক হওয়ায় তার ৭ লাখ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে দাবি করে মামলা করতে এসে নিজেই ফেঁসে গেছেন তিনি।

বুধবার (৮ মে) এই অভিযোগ নিয়ে ঢাকার সাইবার ট্রাইব্যুনালের বিচারক এ এম জুলফিকার হায়াতের আদালতে মামলা করতে আসেন অইয়ুব। আদালতে জবানবন্দি দেওয়ার সময় বিচারক তাকে জিজ্ঞাসা করেন, আপনি কি ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম? জবাবে তিনি বলেন, না। তখন বিচারক প্রশ্ন করেন, তাহলে আপনি ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নামে পেজ খুললেন কেন? তখন আইয়ুব খান প্রশ্নের জবাব না দিতে পেরে আমতা আমতা করতে থাকেন।

এরপর বিচারক একজন ম্যাজিস্ট্রেটের নামে পেজ খুলে প্রতারণার অভিযোগে আইয়ুব খানকে আসামির কাঠগড়ায় ঢোকানোর জন্য পুলিশকে নির্দেশ দেন। 

নির্দেশ অনুযায়ী তাকে আসামির কাঠগড়ায় ঢোকানোর পর প্রায় দুই ঘণ্টা আটকে রাখা হয়। এরপর আদালত তার জবানবন্দি গ্রহণ করেন। জবানবন্দিতে তিনি বলেন, তার পরিচালনাকারী একটি পেজ হ্যাক হয়েছে। তিনি এর বিচার চান। আদালত মামলার অভিযোগ আমলে না নিয়ে তা খারিজের আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। 

আইয়ুব খান অভিযোগ করেন, ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নামে তার তৈরি করা একটি পেজ হ্যাক করেছে ‘সেলিব্রেটিং জিন রডেনবেরি : স্টার টেকস ব্রিজ অ্যান্ড নাসা’ নামে ফেসবুক আইডি পরিচালনাকারী ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান। এরপর থেকে তার পেজের নিয়ন্ত্রণ তার নিজের হাতে নেই। পেজটি হ্যাক করায় ৭ লাখ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে বলে আবেদনে উল্লেখ করেন তিনি!

সংশ্লিষ্ট আদালতের সহকারী বেঞ্চ সহকারী জুয়েল মিয়া ঢাকা পোস্টকে বলেন, আদালতের প্রশ্নের মুখে আইয়ুব খান একেকবার একেক রকম কথা বলেছিলেন। ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নামে পেজ তার অনুমতি ছাড়াই খুলেছেন। তিনি নিজেকে ওই পেজের এডমিন হিসেবে দাবি করেন। একবার তিনি বলেছেন তার শিক্ষাগত যোগ্যতা ক্লাস নাইন পর্যন্ত, আরেকবার নিজেকে সাংবাদিক হিসেবে পরিচয় দেন। দুই ঘণ্টা কাঠগড়ায় দাঁড়ানো শেষে এজলাস থেকে বের হয়ে তিনি কলার ব্যবসা করেন বলে জানান।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর নজরুল ইসলাম শামীম ঢাকা পোস্টকে বলেন, এই ব্যক্তি ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নামে আইডি খোলেন। সেই আইডি হ্যাক যারা করেছে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করতে আসেন তিনি। এসময় আদালত বাদীকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলম কি না। জবাবে বাদী তার নাম আইয়ুব খান বলে জানান। তখন আদালত তার কাছে জানতে চান কেন তিনি ম্যাজিস্ট্রেট সারোয়ার আলমের নামে পেজ খুললেন? তখন নিজেকে ওই পেজের এডমিন দাবি করেন। তবে সারোয়ার আলমের কোনো অনুমতি নেওয়া ছিল না বলে জানান। এ সময় আদালত অন্যের অনুমতি ছাড়া পেজ খোলায় তাকে দুই ঘণ্টা কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়ে রাখেন। এমন বিষয় নিয়ে মামলা দায়ের করতে আসায় আইয়ুবের পক্ষের আইনজীবীদের ভর্ৎসনা করেন আদালত। 

এনআর/এসকেডি