শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানি : বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক রিমান্ডে
বাংলাদেশ ইউনিভার্সিটি অব প্রফেশনালসের (বিইউপি) এক শিক্ষিকাকে যৌন হয়রানির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শান্ত মারিয়ামের সহকারী অধ্যাপক রশি কামলের (৪০) চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
বৃহস্পতিবার (১৮ এপ্রিল) আদালতে আসামিকে হাজির করে ১০ দিনের রিমান্ডে নিতে আবেদন করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. মেহেদী হাসানের আদালত তার চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে অনলাইনে উত্যক্ত ও ধর্ষণের হুমকির অভিযোগে ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে ঢাকার পল্লবী থানায় মামলা দায়ের করেন ওই ভুক্তভোগী নারী। এজাহারে তিনি অভিযোগ করেন, ২০২৩ সালের আগস্ট মাসে আমার একটি গবেষণা ইন্দোনেশিয়ান জার্নাল অব সোশ্যাল রিসার্চ নামক জার্নালে প্রকাশিত হয়। গত ১৭ মার্চ আমার বর্তমান বাসায় অবস্থানকালে আমার ব্যক্তিগত ইমেইলে গবেষণাপত্রটি চেয়ে আসামি রশি কামাল মেইল করতে অনুরোধ করেন। তিনি শান্ত-মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়াও কয়েকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে শিক্ষকতা করেছেন বলে পরিচয় দেন। আসামির অনুরোধের পরিপ্রেক্ষিতে আমি আমার গবেষণাপত্রটি তার মেইলে পাঠিয়ে দিই। আমার গবেষণাপত্রটি আসামি পড়ে এবং খুব প্রশংসা করে।
একটি কনফারেন্সে প্রকাশের জন্য আমার সঙ্গে যৌথভাবে গবেষণা করার আগ্রহ প্রকাশ করে। আমার কাছে সিভি চাইলে আমি তা প্রদান করি। পরবর্তীতে আমি তার রিসার্চ গেইটের লিংক চাইলে সে তার ইমেইল থেকে আমার ইমেইলে পাঠায়। আমি তার গবেষণাপত্রগুলো পড়ে বুঝতে পারলাম যে, তার গবেষণাগুলো ইঞ্জিনিয়ারিং সংক্রান্ত যা আমার গবেষণার বিষয় থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন। বিধায় আমি তার সঙ্গে কাজ করতে আগ্রহ প্রকাশ করিনি। তবুও সে আমার সাথে স্কাইপিতে ভিডিও কলে কথা বলার জন্য বার বার অনুরোধ করে, কিন্তু আমি তার সঙ্গে ভিডিও কলে কথা বলতে রাজি হইনি।
এরপর গত ২৯ মার্চ রাত ১টার দিকে আসামি আমাকে ফোন দেয় এবং যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলে ফোন রেখে দেয়। আসামি আমার হোয়াটসঅ্যাপসহ মোবাইল নম্বরে একাধিকবার কল দিয়ে নিজেকে রশি কামাল পরিচয় দিয়ে আক্রমণাত্মক ভাষা ব্যবহার করে। এরই ধারাবাহিকতায় গত ২৯ মার্চ রাত থেকে ৭ এপ্রিল পর্যন্ত বিভিন্ন সময়ে হোয়াটসঅ্যাপ নম্বর হতে আমার হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে অশ্লীল যৌন হয়রানিমূলক কথাবার্তা বলে ধর্ষণ করার হুমকি প্রদান করে। এ সময় হোয়াটসঅ্যাপে অশ্লীল ছবি পাঠায়। আমি তাকে এমন আচরণের কারণ জানতে চাইলে সে আমাকে গালিগালাজ করে এবং নোংরা ছবি নেট দুনিয়ায় ছেড়ে দিয়ে আমার মান-সম্মান ও সামাজিক মর্যাদাহানি করবে বলে হুমকি প্রদান করে।
শান্ত মারিয়ামের প্রতিবাদ
প্রকাশিত এই সংবাদের প্রতিবাদ জানিয়েছে শান্ত মারিয়াম বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। প্রতিবাদলিপিতে তারা বলেছে, প্রকাশিত সংবাদে রশি কামালকে শান্ত মারিয়াম ইউনিভার্সিটির শিক্ষক হিসেবে উল্লেখ করা হলেও বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তার ন্যূনতম কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই। তিনি ৫ বছর আগে মাত্র ১ মাস ইউনিভার্সিটির সিএসই ডিপার্টমেন্টে (০১/০৪/২০১৮ থেকে ১০/০৫/২০১৮ পর্যন্ত) শিক্ষক হিসাবে কর্মরত ছিলেন।
এনআর/এসকেডি