চট্টগ্রামের এক বৃদ্ধা মাকে মারধরের অভিযোগে করা মামলায় তিন সন্তানকে আগাম জামিন দেননি হাইকোর্ট। ওই তিন সন্তান হলেন– হামিদুল হক সোহেল, তাসলিমা আক্তার সুমি ও সেলিম রেজা।

রোববার (২৫ ফেব্রুয়ারি) এ বিষয়ে করা আবেদনের শুনানি শেষে বিচারপতি মো. রেজাউল হাসান ও বিচারপতি ফাহমিদা কাদেরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

সংশ্লিষ্ট আদালতের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল একেএম আমিন উদ্দিন মানিক আদেশের বিষয়টি জানিয়েছেন। তিনি বলেন, এ আদেশের ফলে আসামিদের পুলিশ যেকোনো মুহূর্তে গ্রেপ্তার করতে পারবে। এমনকি আজ কোর্ট থেকে বের হওয়ার সময়ও তাদের গ্রেপ্তার করতে পারবে।

আমিন উদ্দিন মানিক জানান, আসামিরা বিচারিক আদালতে গিয়ে আত্মসমর্পণ করে জামিন নিতে পারবেন। আদালত চাইলে তাদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিতে পারেন।

আজ তিন সন্তানের আগাম জামিন ঠেকাতে হাইকোর্টে আসেন ৭২ বছর বয়সী এক মা। খুরশিদা আক্তার নামের সেই বৃদ্ধা হাইকোর্টকে জানান, তার দুই সন্তানকে জামিন দিলে তাকে তারা মেরে ফেলবে।

তিনি আরও জানান, তার দুই ছেলে-মেয়ে সরকারি কর্মকর্তা হয়েও সম্পত্তির জন্য তাকে মারধর করেন।

আদালতকে সামাজিক অবক্ষয়ের কথা উল্লেখ করে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, যেখানে বৃদ্ধ বয়সে মা-বাবাকে সন্তানদের দেখাশোনা করার কথা, সেখানে সম্পত্তির জন্য মারধর করে। এর আগে খুরশিদা আক্তার কিছু সম্পত্তি বিক্রি করলে, সে টাকা নেওয়ার জন্যও সন্তানরা তাকে মারধর করে। এর মেডিকেল সার্টিফিকেটও তিনি জমা দিয়েছেন।

ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, আমি আদালতের কাছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চেয়েছি। হাইকোর্ট বিষয়টি অনুধাবন করে তাদের জামিন নামঞ্জুর করেছেন এবং খুব রূঢ়ভাবে বলেছেন তাদের জামিন দেওয়া সম্ভব নয়।

এসময় সেই বৃদ্ধার সন্তানদের আইনজীবী আদালতকে জানান, আরেক মেয়ের ইন্ধনে খুরশিদা আক্তার এ মামলা করেছেন। এ মামলার আগে তারা মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। এসময় আসামিদের ভর্ৎসনা করে হাইকোর্ট বলেন, যে সন্তান মায়ের বিরুদ্ধে মামলা করতে পারে, সে কোনোভাবেই ভালো হতে পারে না।

এনএম/এসএসএইচ