সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিকে ঐক্যবদ্ধ ও দলীয়মুক্ত করতে ১১ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেছে নির্দলীয় ঐক্যবদ্ধ বার আন্দোলন নামে একটি সংগঠন।

আজ (বৃহস্পতিবার) দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট বারের ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম কার্যালয়ে সংগঠনটির নেতারা এ ১১ দফা ঘোষণা করেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নির্দলীয় ঐক্যবদ্ধ বার আন্দোলনের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সুরাইয়া বেগম।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থাকে সুদৃঢ় করার জন্য সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দৃঢ় প্রত্যয় আমাদের অনন্য ইতিহাসেরই অংশ। যার ফলশ্রুতিতে বাংলাদেশের বিচার ব্যবস্থার অবস্থান ছিল উচ্চতার চরম শিখরে। কিন্তু অবক্ষয়িত সমাজ ব্যবস্থার চাপে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি আজ বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। পরস্পরের প্রতি আস্থা হারিয়ে বন্ধু নয় শত্রুতার গভীরে ডুবে গেছি আমরা। আজকের দিনে দাঁড়িয়ে আমরা কেউ কাউকে বিশ্বাস করতে পারছি না। বর্তমানে আইনজীবী সমাজ নয়, বিবাদমান একজন গোষ্ঠীতে রূপান্তরিত হয়েছি আমরা। ব্যক্তিগত সম্মান এবং পেশাগত মর্যাদা ভূলুণ্ঠিত করে এক অদ্ভুত নেশার পিছনে ছুটছি। কিন্তু বেশিরভাগ আইনজীবী ওই জন্য দায়ী নন, তারা শুধু পরিস্থিতির স্বীকার। দেশ ও জাতির স্বার্থে সুষ্ঠু বিচার ব্যবস্থা পুনর্গঠন এবং বিজ্ঞ আইনজীবীদের মর্যাদা সমুন্নত করার জন্য আমাদের প্রয়োজন একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তিশালী বার, যা গণমুখী আধুনিক বিচার ব্যবস্থার পূর্বশর্ত। কিন্তু বর্তমানে রাজনৈতিক দলের প্রভাবে অত্র আইনজীবী সমিতি দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে। সদস্যবৃন্দের মধ্যে পারস্পারিক মর্যাদা ও সম্মানবোধ শূন্যের কোঠায় পৌঁছেছে। আইনজীবী সমিতি দলীয় রাজনৈতিক ক্রীড়ানকে পরিণত হয়ে নৈমিত্তিক ব্যাপার হয়ে গেছে। 

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, আমাদের বিচার ব্যবস্থা সংবিধানের সর্বশেষ রক্ষাকবচ। আর বিচার ব্যবস্থার রক্ষাকবচ হচ্ছে আইনজীবী সমিতি। 

১১ দফা ঘোষণা
• সমিতি অঙ্গনকে দলীয় রাজনীতি মুক্ত করতে হবে।
• সমিতির নির্বাচন দলীয় নমিনেশন এবং প্যানেল মুক্ত করতে হবে।
• সমিতির নির্বাচন সম্পাদনের জন্য ইলেকশন সাব-কমিটির পরিবর্তে আর্থিক ও ভোটার লিস্ট তৈরি করার ক্ষমতাসম্পন্ন একটি স্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠন করতে হবে।
• সমিতির নিয়মিত-অনিয়মিত এবং সহযোগী সদস্যদের তালিকা প্রকাশ করে শুধুমাত্র নিয়মিত সদস্যদের নিয়ে ভোটার লিস্ট তৈরি করতে হবে।
• সমিতির নির্বাচনে মনোনয়ন ফি বাতিল করতে হবে।
• কোন আইনজীবী একই পদে ২ বারের বেশি নির্বাচিত হতে পারবেন না।
• কার্যনির্বাহী কমিটির সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে কিউবিক্যল বরাদ্দ করতে হবে।
• সমিতির আয়-ব্যয়ের হিসাবের স্বচ্ছতার জন্য ই-ম্যানেজমেন্ট পদ্ধতি চালু করতে হবে।
• সভাপতি ও সম্পাদকের কার্য ও ক্ষমতার ভারসাম্য আনয়ন করতে হবে।
• সমিতির নতুন সদস্য ভর্তির ক্ষেত্রে সদস্য ফি নির্ধারিত বার্ষিক চাঁদার অতিরিক্ত হতে পারবে না। 
• উপরোক্ত প্রস্তাবসমূহ কার্যকর করার জন্য গঠনতন্ত্রে বিদ্যমান অনুচ্ছেদগুলোর বাস্তবায়নসহ প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতে হবে।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নির্দলীয় ঐক্যবদ্ধ বার আন্দোলনের যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট আলহাজ্ব এম এ মজিদ, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম, সদস্য সচিব ড. অ্যাডভোকেট শিব্বির আহমেদ।

এমএইচডি/এনএফ