দ্বাদশ জাতীয় সংসদকে ‘পিকনিক সংসদ’ আখ্যা দিয়েছেন হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী। 

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) দুপুরে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত কালো পতাকা মিছিল পরবর্তী সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন। নির্বাচন বাতিল ও নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন পুনর্নির্বাচনের দাবিতে এ কালো পতাকা মিছিল বের করা হয়। 

হাইকোর্টের সাবেক বিচারপতি ফয়সাল মাহমুদ ফয়েজী বলেন, জাতীয় পার্টি (জাপা) লুটপাটের অপজিশন। এই সংসদ পিকনিক সংসদ। এই তথাকথিত অপজিশন লুটপাটের অপজিশন। এটা নিপাত যাবে। জনগণ প্রত্যাখ্যান করেছে। আমরা প্রতিদিন প্রত্যাখ্যান করতে থাকব। একদিন এদের নিপাত যাবে ইনশাআল্লাহ। 

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি জয়নুল আবেদীন বলেন, ৭ জানুয়ারি বর্তমান শাসক দল যে নির্বাচন করেছে, সেই নির্বাচনকে কোনো নির্বাচন বলা যায় না। আর এই নির্বাচনের মাধ্যমে যে সংসদ গঠিত হয়েছে, তাকেও নির্বাচিত সংসদ বলা যায় না। এই নির্বাচনে দেশের ৯৫ শতাংশ ভোটার ভোট দেয়নি। তাই নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পুনরায় জাতীয় সংসদ নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।

ইউনাইটেড লইয়ার্স ফ্রন্টের কো-কনভেনর সুব্রত চৌধুরী বলেন, এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে ম্যাসেজ দিতে চাই... আর খেলবেন না। অনেক খেলেছেন। দয়া করে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। তা না হলে গভীর সংকটের মধ্য দিয়ে আপনাদেরকে পদচ্যুত করা হবে।

সুপ্রিম কোর্ট বারের সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টার মাহবুবউদ্দিন খোকন বলেন, পুলিশ ছাড়া আওয়ামী লীগের কোনো অবলম্বন নেই। এই পার্লামেন্ট ডামি। এই ডামি নির্বাচন জনগণ মানে না। আমরা ডামি সরকার মানি না। অবিলম্বে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দিন।

বিএনপির আইন সম্পাদক ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের মহাসচিব ব্যারিস্টার কায়সার কামাল বলেন, এই সংসদ জনগণের সংসদ নয়। আমরা দেশের সার্বভৌমত্ব দেখতে চাই। গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার না হওয়া পর্যন্ত আইনজীবীরা আন্দোলন চালিয়ে যাবে। ঘরে ফিরে যাবে না।

সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সাবেক সম্পাদক ব্যারিস্টা রুহুল কুদ্দুস কাজল বলেন, আমরা আইনের শাসন, মানবাধিকার ও ভোটের অধিকারের জন্য আন্দোলন করি। আমাদের এই আন্দোলন চলছে-চলবে। কোনো ধরনের বাধা আমাদের এই আন্দোলন থেকে বিরত রাখতে পারবে না।

এতে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের সভাপতি আবদুল জব্বার ভূইয়া। সঞ্চালনা করেন ফোরামের সাধারণ সম্পাদক গাজী কামরুল ইসলাম সজল।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন ইউনাইটেড ল’ইয়ার্স ফ্রন্টোর সমন্বয়ক সৈয়দ মামুন মাহবুব, সুপ্রিম কোর্ট ইউনিটের কো-কনভেনর মোহাম্মদ আলী ও শামীমা সুলতানা দিপ্তীসহ অনেকে।

এ দিন দুপুরে বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম আয়োজিত বিএনপি সমর্থক আইনজীবীরা ‘দ্বিতীয় বাকশাল মানিনা, মানবো না’ ব্যানারে কালো পতাকা মিছিল নিয়ে হাইকোর্টের মাজার গেটে আসেন। এ সময় আইনজীবীরা মাজার গেটের বাইরে যাওয়ার চেষ্টাকালে পুলিশ তাদের আটকে দেয়। সোয়া ১টার দিকে বিক্ষোভকারীরা গেটের সামনে বসে পড়েন এবং মাজার গেটে চারপাশে অবস্থান  নিয়ে বিভিন্ন স্লোগান দেন। সেখানেই তারা দুপুর ২টা পর্যন্ত সমাবেশ করেন।

এতে আরও অংশ নেন আইনজীবী আবেদ রাজা, জগলুল হায়দার আফ্রিক, মোরশেদ আল মামুন লিটন, আইনজীবী মো. আক্তারুজ্জামান, আবদুল্লাহ আল মাহবুব, শরীফ ইউ আহমেদ, ব্যারিস্টার মনিরুজ্জামান আসাদ, মো. কামাল হোসেন, জিয়াউর রহমান, সাবেক সহ-সম্পাদক মাহবুবুর রহমান খান, আইনজীবী রেজাউল করীম রেজা, জহিরুল ইসলাম সুমন, শহীদুল ইসলাম সপু, মো. মিজানুর রহমান, ফাতেমা আক্তার, মো. মাকসুদ উল্লাহ, আনিসুর রহমান রায়হান, একেএম এহসানুর রহমান, নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, মু. কাইয়ুম, জামিউল হক ফয়সাল ও গোলাম মোক্তাদির উজ্জলসহ শতাধিক আইনজীবী।

এমএইচএন/কেএ