হেফাজত নেতা মাওলানা মামুনুল হকের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রিমান্ড শুনানির সময় আদালতের অনুমতি নিয়ে কথা বলেন মামুনুল। এসময় তিনি আদালতের কাছে ইবাদত করার উপযোগী জায়গায় তাকে রাখার আবেদন জানান।

সোমবার (১৯ এপ্রিল) রিমান্ড শুনানি শেষে মামুনুলের পক্ষে আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন।

আইনজীবী বলেন, মামুনুলের বিরুদ্ধে মুসল্লিদের মসজিদ থেকে এক ব্যক্তিকে বের করে দেওয়া নির্দেশনা দেওয়ার অভিযোগ আনা হয়েছে। বের করে দেওয়ার সময় তার কাছ থেকে টাকা নিয়ে নেওয়ার কথাও এজাহারে উল্লেখ করা হয়েছে। মূলত এ ধরনের কোনো ঘটনাই ঘটেনি।

তিনি আরও বলেন, গতকাল গ্রেফতারের পর তাকে দীর্ঘসময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। সেজন্য তাকে আর রিমান্ডে নেওয়ার প্রয়োজন নেই বলে আদালতকে জানিয়েছি।

আইনজীবী সৈয়দ মেজবাহ বলেন, এসময় আদালতের কাছে কথা বলার অনুমতি চান মাওলানা মামুনুল। অনুমতি নিয়ে মামুনুল বলেন, ‘আমি রমজানে নিয়মিত ইবাদত করি, রোজা রাখি। গতকাল আমাকে যেখানে রাখা হয়েছে সেটা বসবাস ও ইবাদতের অনুপযোগী। আমি আদালতের কাছে আবেদন জানাই, আমাকে যেন ইবাদতের উপযোগী জায়গায় রাখা হয়। তখন আদালত বলেন, আপনাকে ইবাদতের উপযোগী জায়গায় রাখা হবে। আপনার কোনো কষ্ট হবে না, ইবাদতের বিঘ্ন ঘটবে না। ’ 

এর আগে বেলা ১১টা ২০ মিনিটে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক আদালতের হাজত খানায় আনা হয়। এরপর মোহাম্মদপুর থানার মামলায় তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) সাজেদুল হকের করা আবেদনের শুনানি শেষে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করা হয়। ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট দেবদাস চন্দ্র অধিকারী এ আদেশ দেন।

এর আগে, হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে বেলা ১১টা ৮ মিনিটে আদালতে হাজির করা হয়। 

মোহাম্মদপুর থানার এ মামলায় মারধর, হত্যার উদ্দেশ্যে আঘাতে গুরুতর জখম, চুরি, হুমকি ও ধর্মীয় কাজে ইচ্ছাকৃতভাবে গোলযোগের অভিযোগ এনে স্থানীয় এক ব্যক্তি মামুনুলের বিরুদ্ধে এ মামলাটি দায়ের করেন। এর আগে রোববার (১৮ এপ্রিল) রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

গত এক মাস ধরে ব্যক্তিগত জীবন আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনার কেন্দ্রে রয়েছেন মাওলানা মামুনুল হক।

নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যু হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। মামুনুলকে এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে মনে করছে পুলিশ।

ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।

টিএইচ/এআর/এসএম