খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে দুদকে বারবার সময় চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে রিটকারী আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন বলেছেন, দুদকের আইনজীবী মাঝে মাঝেই বলেন তারা কারো কাছে মাথানত করেন না। কিন্তু আমার মনে হয়, সালাম মুর্শেদীর বাড়ি নিয়ে দুদক নীরব। তারা মাথানত করেছে কি না, তা বলতে পারব না। তবে সালাম মুর্শেদীর বাড়ির প্রশ্নে দুদকের যে মাথা ঘোরায়, এটুকু বলতে পারি।

ব্যারিস্টার সুমনের এ বক্তব্য মনগড়া বলে মন্তব্য করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন, সুমন সাহেব তো অনেক কথাই বলে থাকেন। তার কথা মতো তো আমরা প্রতিবেদন দেব না। আদালতের নির্দেশে আমরা প্রতিবেদন দাখিল করব।

তিনি আরও বলেন, এখনো বলছি দুদক কারো কাছে মাথানত করে না। দুদকের কারণেই সাবেক প্রধানমন্ত্রী, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রীদের সাজা হয়েছে।

এদিকে খুলনা-৪ আসনের সংসদ সদস্য ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সহ-সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে দুদককে অনুসন্ধান প্রতিবেদন আগামী ৮ ফেব্রুয়ারি দাখিলের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।

বুধবার (১৭ জানুয়ারি) বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

এর আগে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে অভিযোগ অনুসন্ধানে দুই সদস্যের কমিটি গঠন করে দুর্নীতি দমন (দুদক)।

গত বছরের ১৬ জানুয়ারি আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত মূল নথি ও এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন অ্যাফিডেভিট করে এক সপ্তাহের মধ্যে দাখিলের নির্দেশ দেন  হাইকোর্ট। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

গত ১২ ডিসেম্বর আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সংক্রান্ত নথি ও প্রতিবেদন দাখিল করতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট। গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় ও রাজউককে এ নির্দেশ বাস্তবায়ন করতে বলা হয়। একইসঙ্গে আব্দুস সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি নিয়ে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদন দুদককে দিতে নির্দেশ দেন হাইকোর্ট।

গত ১৩ নভেম্বর সালাম মুর্শেদীর দখলে থাকা গুলশানের বাড়ি সম্পর্কিত কাগজপত্র হাইকোর্টে দাখিল করা হয়। সেদিন সালাম মুর্শেদীর পক্ষে কাগজপত্র দাখিল করেন তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাঈদ আহমেদ রাজা।

গত ১ নভেম্বর সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বিবাদীদের নিষ্ক্রিয়তা কেন অবৈধ ঘোষণা করা হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন হাইকোর্ট। সেই সঙ্গে এ সম্পত্তি সম্পর্কিত সব কাগজপত্র ১০ দিনের মধ্যে আদালতে দাখিল করতে (রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ) রাজউক, গণপূর্ত বিভাগ ও সালাম মুর্শেদীকে নির্দেশ দেন আদালত। বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

তারও আগে সরকারের সম্পত্তি নিজের নামে লিখে নিয়ে বাড়ি বানানোর অভিযোগে সালাম মুর্শেদীর বিরুদ্ধে রিট করা হয়। ৬ নভেম্বর সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন এ রিট দায়ের করেন। রিটে দুর্নীতি দমন কমিশনসহ (দুদক) সংশ্লিষ্টদের বিবাদী করা হয়।

এমএইচডি/এসএসএইচ