হেফাজতের সাংগঠনিক সম্পাদক আজিজুল হক ইসলামাবাদী রিমান্ডে
হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক মাওলানা আজিজুল হক ইসলামাবাদীর সাতদিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। রোববার (১৮ এপ্রিল) ঢাকা মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট শাহিনুর রহমান শুনানি শেষে এ আদেশ দেন।
আদালতের সাধারণ নিবন্ধন শাখা থেকে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ২০১৩ সালের রাজধানীর মতিঝিল থানায় করা নাশকতার মামলায় গ্রেফতার দেখানোসহ ১০ দিনের রিমান্ডের জন্য আবেদন করা হয়। এ সময় আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ জয়নাল আবেদীন মেজবাহ রিমান্ড বাতিল শেষে জামিন আবেদন করেন। অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষে বিরোধিতা করেন। উভয় পক্ষের শুনানি শেষে বিচারক রিমান্ডের আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত সোমবার (১২ এপ্রিল) ২০১৩ সালের পল্টন থানায় করা মামলায় সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। গত রোববার (১১ এপ্রিল) মধ্যরাতে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে র্যাবের সঙ্গে যৌথ অভিযানে আজিজুল হককে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ। ডিবির যুগ্ম-কমিশনার মো. মাহবুব আলম ঢাকা পোস্টকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
তিনি জানান, গ্রেফতারের পর হেফাজতের সাম্প্রতিক সহিংসতার ঘটনা এবং ২০১৩ সালের ৫ মে পল্টন ও মতিঝিলে হেফাজতের তাণ্ডবের বিষয়ে ঢাকায় ডিবি কার্যালয়ে তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। এরপর আরও জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রিমান্ড চেয়ে আদালতে পাঠানো হয়।
এদিকে রাজধানীর মোহাম্মদপুরের জামিয়া রাহমানিয়া মাদরাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হককে গ্রেফতার করা হয়েছে।
মামুনুলকে গ্রেফতারের বিষয়ে রোববার (১৮ এপ্রিল) দুপুর পৌনে ২টার দিকে গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন তেজগাঁও বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) হারুন-অর-রশিদ। জানালেন কোন পরিপ্রেক্ষিতে, কীভাবে হেফাজত নেতাকে গ্রেফতার করা হলো।
হারুন অর রশীদ বলেন, মামুনুলের বিরুদ্ধে পুলিশের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা, থানায় হামলা, রেজিস্ট্রার অফিসে হামলা ভাঙচুরসহ অনেকগুলো মামলা রয়েছে। এসব মামলার তদন্ত চলছিল। আমরা দীর্ঘদিন ধরে তাকে নজরদারিতে রেখেছিলাম, পাশাপাশি এসব মামলার তদন্ত করছিলাম। তদন্তে তার সুস্পষ্ট সংশ্লিষ্টতার প্রমাণ পেয়েই তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
গত এক মাস ধরে ব্যক্তিগত জীবন থেকে শুরু করে স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী ও জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সফরের বিরোধিতা করে হেফাজতের আন্দোলনসহ নানা কারণে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আছেন মাওলানা মামুনুল হক।
নরেন্দ্র মোদির সফরের সময় ২৬ থেকে ২৮ মার্চ পর্যন্ত সহিংসতায় দেশে ১৭ জনের মৃত্যুর হয়। এসব সহিংসতার ঘটনায় সারাদেশে প্রায় অর্ধশতাধিক মামলা হয়েছে। মামুনুলকে এসব ঘটনার মূল ইন্ধনদাতা হিসেবে মনে করছে পুলিশ।
ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) সূত্রে জানা যায়, ২৬ মার্চ জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে সহিংসতার ঘটনায় গত ৫ এপ্রিল হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হকসহ ১৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে। মামলায় ২ হাজার ব্যক্তিকে অজ্ঞাতনামা আসামিও করা হয়। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের উপ-দফতর সম্পাদক খন্দকার আরিফুজ্জামান বাদী হয়ে পল্টন থানায় মামলাটি করেন।
টিএইচ/ওএফ