এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন জটিলতায় ফেনী-৩ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল কবীর (রিন্টু আনোয়ার) এবং লক্ষ্মীপুর-৪ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তার পালোয়ানের মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের দেওয়া সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একই সঙ্গে তাদের প্রতীক বরাদ্দ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এদিকে ঋণখেলাপের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদ এবং নোয়াখালী-৪ ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

আজ (বুধবার) পৃথক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।

অন্যদিকে ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সালামের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। এ ছাড়া বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন। আবেদনে হাইকোর্টের আদেশে স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি। 

রিন্টু আনোয়ার
গত ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ের সময় এক শতাংশ ভোটারের তথ্য না পাওয়ার কারণ দেখিয়ে ফেনী-৩ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল কবীরের (রিন্টু আনোয়ার) মনোনয়নপত্র বাতিল করেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এ বিষয়ে তিনি আপিল করলে নির্বাচন কমিশন তা নামঞ্জুর করে। নির্বাচন কমিশনের এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন রিন্টু। পরে রিটের শুনানি নিয়ে হাইকোর্ট নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে তাকে প্রতীক বরাদ্দের নির্দেশ দেন।

আবদুস সাত্তার পালোয়ান
এক শতাংশ ভোটারের সমর্থন জটিলতায় লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুস সাত্তার পালোয়ানের মনোনয়ন বাতিল করে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করেছেন হাইকোর্ট। একইসঙ্গে তাকে প্রতীক বরাদ্দ দিতে রিটার্নিং কর্মকর্তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।  

গত ৪ ডিসেম্বর যাচাই-বাছাইয়ের সময় এক শতাংশ ভোটারের তথ্য না পাওয়ার কারণ দেখিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তা তার মনোনয়নপত্র বাতিল করেন। আপিল করার পর তা ১৩ ডিসেম্বর নামঞ্জুর করে নির্বাচন কমিশন। পরে তিনি হাইকোর্ট রিট করেন।

সালাহ উদ্দিন
ঋণখেলাপের অভিযোগে প্রার্থিতা বাতিলের বিরুদ্ধে কক্সবাজার-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী সালাহ উদ্দিন আহমদের রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

বুধবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। এর আগে ঋণখেলাপির দায়ে সালাহ উদ্দিনের প্রার্থিতা বাতিল করেছিলেন রিটার্নিং কর্মকর্তা। এর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেছিলেন সালাহ উদ্দিন। ১৫ ডিসেম্বর সে আপিল নামঞ্জুর করে দেয় কমিশন। এরপর তিনি হাইকোর্টে রিট করেন।

মেজর মান্নান
নোয়াখালী-৪ ও লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে বিকল্পধারা বাংলাদেশের মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নানের করা রিট সরাসরি খারিজ করে দিয়েছেন হাইকোর্ট। 

বুধবার বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর হাইকোর্ট বেঞ্চ লক্ষ্মীপুর-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে তার রিট খারিজ করে দেন। অপরদিকে হাইকোর্টের একই বেঞ্চ নোয়াখালী-৪ আসনে প্রার্থিতা ফিরে পেতে আবদুল মান্নানের করা রিটটি খারিজ করে দেন।

ঋণখেলাপের অভিযোগে রিটার্নিং কর্মকর্তা গত ৩ ও ৪ ডিসেম্বর ওই দুই আসনে তার মনোনয়নপত্র বাতিল ঘোষণা করেন। এ নিয়ে নির্বাচন কমিশনে আপিল করেন তিনি। শুনানি শেষে নির্বাচন কমিশন তার আপিল নামঞ্জুর করে। এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টে যান তিনি।

আব্দুস সালাম
ময়মনসিংহ-৯ আসনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী আব্দুস সালামের প্রার্থিতা ফিরিয়ে দিয়ে হাইকোর্টের আদেশ বহাল রেখেছেন চেম্বার আদালত। বুধবার আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। এর আগে গত ১৪ ডিসেম্বর ঋণ খেলাপের অভিযোগ এনে আব্দুস সালামের প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। পরে এই সিদ্ধান্ত চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করেন তিনি। গত ১৮ ডিসেম্বর হাইকোর্ট ওই রিটের শুনানি নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্ত স্থগিত করে দেন। হাইকোর্টের এই আদেশ চ্যালেঞ্জ করে আপিল বিভাগে যান আসনটির বর্তমান সংসদ সদস্য ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ারুল আবেদীন খান।

সাদিক আব্দুল্লাহ
বরিশাল-৫ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহ প্রার্থিতা ফেরত চেয়ে ফের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করেছেন। আবেদনে হাইকোর্টের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহার চেয়েছেন তিনি। 

বুধবার আবেদনের বিষয়টি জানান সাদিক আবদুল্লাহর আইনজীবী খুরশীদ আলম খান। তিনি বলেন এ বিষয়ে বৃহস্পতিবার শুনানি হবে চেম্বার জজ আদালতে।

এর আগে গত মঙ্গলবার সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করে হাইকোর্টের দেওয়া রায় স্থগিত করেন আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত। এর ফলে তার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দিতা করার সুযোগ বন্ধ হয়ে যায়। আপিল বিভাগের চেম্বার বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম এ আদেশ দেন। তার আগে সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বৈধ ঘোষণা করেন হাইকোর্ট। এ আদেশের বিরুদ্ধে আপিল বিভাগে যান ওই আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী কর্নেল জাহিদ ফারুক। গত ১৫ ডিসেম্বর দ্বৈত নাগরিকত্ব ইস্যুতে সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর প্রার্থিতা বাতিল করে নির্বাচন কমিশন (ইসি)।

এমএইচডি/এনএফ