ঢাকার একটি বেসরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিক্ষার্থীকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের মামলায় আসামি মো. আমির হোসেন ওরফে মো. আমির শাহের (৩৫) জামিন খারিজ করে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি আবু তাহের মো. সাইফুর রহমান ও বিচারপতি মো. বশির উল্লাহর  হাইকোর্ট বেঞ্চ এই আদেশ দেন।

আদালত বলেন, অভিযুক্ত এই ব্যক্তির হাত থেকে বাঁচতে মেয়েটি বিদেশে আশ্রয় নিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও এই আসামি তাকে ছাড় দেয়নি। গোপনে করা ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দিয়েছে। এ ধরনের জঘন্য অপরাধী আদালত থেকে কোনো ধরনের আইনি প্রতিকার পেতে পারে না। এরপরই আসামিকে নিজেদের হেফাজতে নেয় পুলিশ।

আদালতে জামিনের বিরোধিতা করে রাষ্ট্রপক্ষে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল কেএম মাসুদ রুমি শুনানি করেন। আসামির পক্ষে মো. এমদাদুল হক কাজী শুনানি করেন। শুনানি শেষে আদালত জামিন না দেওয়ার কথা জানান। তখন আসামির আইনজীবী আবেদনটি উত্থাপিত হয়নি মর্মে খারিজ করে দেওয়ার আবেদন জানান। হাইকোর্ট বলেন, এ ধরনের অপরাধের ক্ষেত্রে আমরা সেই সুযোগও দেব না আসামিকে। এরপরই সরাসরি জামিন আবেদন খারিজ করে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার আদেশ দেন আদালত।

মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, এমবিবিএস পড়াকালীন ২০১৬ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে আমিরের সঙ্গে পরিচয় হয় ওই নারী শিক্ষার্থীর। পরিচয় ঘনিষ্ঠ হলে আসামি ভালোবাসার অভিনয় করে এবং বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময়ে তাকে ধর্ষণ করে। সেই ধর্ষণের সংগৃহীত ছবি ও ভিডিও ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে নানা সময়ে মোট তিন লাখ ২৯ হাজার টাকা আদায় করে। পরবর্তীকালে বিয়ের প্রস্তাব দিয়ে ২০২২ সালে আবার ধর্ষণ করে। পরে ওই চিকিৎসক বিদেশে চলে যান। এরপর ক্ষিপ্ত হয়ে আসামি ভিডিওগুলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছেড়ে দেয়। 

এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২০ সালে এমবিবিএস পাস করে ওই হাসপাতালেই চিকিৎসক হিসাবে কর্মরত ছিলেন এই নারী। এ ঘটনায় গত ২১ নভেম্বর চকবাজার থানায় পরিবারের পক্ষ থেকে মামলা করা হয়। নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৯(১) ধারা এবং পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনের ৮(১)(২)(৩) ধারায় এ মামলা করা হয়।

মামলায় আগাম জামিন নিতে মঙ্গলবার হাইকোর্টে আত্মসমর্পণ করেন আসামি। এ সময় আসামির সঙ্গে তার স্ত্রীও আদালতে হাজির হন। শুনানির এক পর্যায়ে আসামির স্ত্রী স্বামীর পক্ষে আদালতে সাফাই গান। তিনি বলেন, সবারই কিছু না কিছু অতীত থাকে। তখন হাইকোর্ট বলেন, এ ধরনের ঘটনা যদি আপনার ক্ষেত্রে ঘটতো তখন কি এই প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করতে পারতেন। এরপরই আদালত জামিন না দিয়ে আসামিকে পুলিশের সোপর্দ করেন।

এমএইচডি/জেডএস