সম্মিলিত শিক্ষা আন্দোলন ২০২৩ নামক একটি ফেসবুক গ্রুপের মডারেটর সুলতানা নাসরীন তাজ খান ওরফে তাপসী খানের ছয় সপ্তাহের আগাম জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

মঙ্গলবার (৫ ডিসেম্বর) বিচারপতি শেখ মো. জাকির হোসেন ও বিচারপতি এ.কে.এম জহিরুল হকের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। 

আদালতে জামিন শুনানি করেন ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির পল্লব। তাকে সহযোগিতা করেন অ্যাডভোকেট বায়েজীদ হোসাইন, নাঈম সরদার ও ব্যারিস্টার সোলায়মান তুষার। 

এর আগে, জাতীয় শিক্ষা কার্যক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডের সহকারী সচিব মো. আলমগীর হোসেন গত ২১ নভেম্বর সাইবার নিরাপত্তা আইন ২০২৩ এর  ১৭/২৪/২৫/২৮/২৯/৩১/৩৩ সহ দণ্ডিবিধির ৩৭৯/ ১০৯ ধারানুযায়ী রাজধানীর মতিঝিল থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

জানা গেছে, তাপসী খানের মেয়ে রাজধানীর মোহাম্মদপুর প্রিপারেটরি স্কুল অ্যান্ড কলেজের ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে পড়ে। তিনি তার মেয়েকে জিজ্ঞেস করেন ধর্মীয় শিক্ষা পরীক্ষার বার্ষিক মূল্যায়নে তাকে কি প্রশ্ন করা হয়েছিল। জবাবে তার মেয়ে বলেন, ধর্ম সম্পর্কে কথা বলেন এমন একজন ব্যক্তির ছবি আঁকতে বলা হয় এবং ওই ব্যক্তি সম্পর্কে লিখতে বলা হয়। ওই ঘটনার প্রেক্ষিতে তাপসী খান ফেসবুক গ্রুপে লিখেন ‌‘ধর্ম পরীক্ষার মূল্যায়নে আমার মেয়েকে একজন নবীর ছবি আঁকতে বলা হয়। আমার মেয়ে ছবি আঁকেনি। মুসলিম হিসেবে এটা মেনে নিতে পারি না। কীভাবে সহ্য করব ? আল্লাহ মাফ করুন।’

এ বিষয়ে ব্যারিস্টার মোহাম্মদ হুমায়ন কবির বলেন, আমার মক্কেল তার ফেসবুকে যে পোস্ট করেছেন তা কোনোভাবেই সাইবার নিরাপত্তা অপরাধ হতে পারে না। আদালত বলেছেন তিনি কারো ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত হানার জন্য পোস্ট দিয়েছেন তা বোঝা যায় না। বরং তিনি ধর্মীয় অনুভূতির বিষয়টাকে আরও প্রশমিত করেছেন।

আদালতকে বলেছি, সংবিধান অনুযায়ী মত প্রকাশের স্বাধীনতা একটি মৌলিক অধিকার। তিনি কোনো ধরনের আইন লঙ্ঘন করেননি।

তিনি আরও বলেন, আমার মক্কেল কোনো প্রকার ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাত দেননি বরং তিনি ধর্মের পক্ষে কথা বলেছেন। তাকে হয়রানি করতে এ মামলা দায়ের করা হয়েছে। তার তিনটি শিশু কন্যা সন্তান রয়েছে যারা চলমান পরীক্ষাও ঠিকমতো দিতে পারেননি। তিনি সন্তানদের নিয়ে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরাফেরা করছেন এবং সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন হয়েছেন। এসব বিষয় বিবেচনা করেই তাকে আগাম জামিন দেওয়া হয়েছে।

এমএইচডি/এমএ