রাজধানীর চকবাজারে এক ব্যবসায়ীর কর্মচারীকে অস্ত্র ঠেকিয়ে সাড়ে ৩৩ লাখ টাকা ছিনতাইয়ের মামলায় দুই আসামি দোষ স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। 

আসামিরা হলেন— চকবাজার থানা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি শেখর আহম্মেদ শুভ ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মিরাজ (২৪)। আদালত আসামিদের দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি গ্রহণ করে তাদেরকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন।

সোমবার (৬ নভেম্বর) আদালতের চকবাজার থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক শওকত হোসেন এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ১ নভেম্বর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজধানীর চকবাজারের মোগলটুলির ৯২ নম্বর বশির ম্যানসনের সামনের সড়কে অস্ত্র ঠেকিয়ে টাকা ছিনতাইয়ের এই ঘটনা ঘটে। ভুক্তভোগী ওই যুবকের নাম আনিসুল ইসলাম। তিনি হাজী সেলিম টাওয়ারের সুবাহান স্টোরের কর্মচারী। 

গত বুধবার দোকানের মালিক দোকানের কর্মচারী আনিসুলকে ৩৩ লাখ ৩৫ হাজার টাকা দিয়ে ব্যাংকে পাঠান। কিন্তু প্রায় দুইঘন্টা হয়ে গেলেও কর্মচারীর কোনো হদিস পাওয়া যায়না। ফোন দিলেও ধরেনা। এক পর্যায়ে দুপুর ১টার দিকে কর্মচারী আনিস রক্তাক্ত অবস্থায় কাঁতরাতে কাঁতরাতে অফিসে আসে। তখন ভুক্তভোগী আনিসুল ইসলাম দোকান মালিককে জানায়, সে দোকান থেকে কিছুদূর যাওয়ার পর হঠাৎ পেছন থেকে ৪-৫ জন লোক তাকে টেনে ধরে কোনোকিছু বুঝে ওঠার আগেই কিলঘুষি মারতে থাকে। এসময় ভুক্তভোগী আনিসুল ডাকাত ডাকাত বলে চিৎকার দিলে আশপাশের মানুষ ছুটে আসলে ছিনতাইকারীরা চকবাজার থানা ছাত্রলীগের নেতা পরিচয় দিয়ে বলতে থাকে ‌‘এই ছেলে (আনিস) জামায়াত-বিএনপির লোক। তাকে থানায় নিতেছি।’ এসময় তারা সবাই জয় বাংলা স্লোগান দিতে দিতে আনিসুলকে রিকশায় তোলে। এই অবস্থায় সাধারণ মানুষেরা তাকে রক্ষায় আর এগিয়ে আসতে সাহস পায়নি।

এরপর আনিসুলকে খুন করার হুমকি দিয়ে ছিনতাইকারীরা একটি নির্মাণাধীন ভবনে নিয়ে ব্যাপক মারধর করে। এসময় টাকার ব্যাগ না দেওয়ায় তার মাথায় পিস্তল (অস্ত্র) ঠেকায় কয়েকজন। এক পর্যায়ে সহ্য করতে না পেরে টাকার ব্যাগ ছেড়ে দেয় আনিস। পরে তাকে চোখ বেঁধে অন্য জায়গায় ফেলে রেখে তারা পালিয়ে যায়।

এই ঘটনায় দোকান মালিক আব্দুস সুবাহান বাদী হয়ে চকবাজার থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। 

এনআর/এমএ