বাঁ থেকে বিচারপতি কাজী জিনাত হক, মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ. আহমেদ মুথাসিম আদনান এবং বিচারপতি নাইমা হায়দার/ ছবি : ঢাকা পোস্ট

সুপ্রিমকোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের একটি বেঞ্চের বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করেছেন মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ. আহমেদ মুথাসিম আদনান। হাইকোর্টের সেই বেঞ্চের দুইজন বিচারপতিই নারী। তারা হলেন, বিচারপতি নাইমা হায়দার ও বিচারপতি কাজী জিনাত হক। ৩০ মিনিট দুই নারী বিচারপতির বিচারকাজ পর্যবেক্ষণ করে অভিভূত হন মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি। বাংলাদেশের বিচার বিভাগের নারীদের অগ্রগতির প্রশংসা করেন তিনি।

রোববার সকাল সাড়ে ১০টায় বিচারপতি নাইমা হায়দারের নেতৃত্বাধীন হাইকোর্ট বেঞ্চে বিচারকাজ শুরু হয়। সাড়ে ১১টা পর্যন্ত বিচারকাজ পরিচালনা করে বিরতিতে যান হাইকোর্ট বেঞ্চ। বিরতিকালীন সময়ে এজলাসে মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতির জন্য চেয়ার বসানোসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। সাড়ে ১২টায় বিচারপতি নাইমা হায়দার মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে এজলাসে আসন গ্রহণ করেন।

বিচারপতি নাইমা হায়দারের ডান পাশে মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি ও বাঁপাশে বিচারপতি কাজী জিনাত হক আসন গ্রহণ করেন। তারপর বেঞ্চের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি নাইমা হায়দার ইংরেজিতে মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতির সংক্ষিপ্ত জীবনী তুলে ধরেন। এরপর এজলাস কক্ষের ডায়াসের সামনে দাঁড়িয়ে জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাঈদ আহমেদ রাজা আইনজীবীদের পক্ষ থেকে মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতিকে অভিবাদন জানান। তিনি বার কাউন্সিল ও বাংলাদেশের আইনজীবী সমিতিগুলো সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরেন। শেষে বক্তব্য রাখেন মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি। তিনি তার বক্তব্যে বাংলাদেশের বিচার বিভাগের প্রশংসা করেন।

বিচার বিভাগে নারীর অগ্রযাত্রার প্রশংসা করেন। বেঞ্চের দুইজন বিচারপতি নারী হওয়ায় অভিভূত হন তিনি। বক্তব্য পর্ব শেষে কার্যতালিকা অনুযায়ী বিচারকাজ শুরু হয়। এর মধ্যে কার্যতালিকায় ৪৬ নম্বরে থাকা রিট মামলাটি খারিজ করে রায় দেন বিচারপতি নাইমা হায়দার।

বিচারপতি নাইমা হায়দার যখন তার স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে ইংলিশে রায় প্রদান করছিলেন তখন এজলাস কক্ষ জুড়ে ছিল নীরবতা। মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতিও মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় রায় ঘোষণা শুনছিলেন। এরপর কার্যতালিকায় ৪৭ নম্বরে থাকা রিট মামলা (অ্যাবসোলুট) যথাযথ ঘোষণা করে রায় দেন বেঞ্চের কনিষ্ঠ বিচারপতি কাজী জিনাত হক। ঘড়ির কাটায় যখন ১টা তখনই রায় ঘোষণা শেষ হয়। রায় ঘোষণা শেষে মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতিকে সঙ্গে নিয়ে এজলাস ছেড়ে নেমে যান বেঞ্চের দুই বিচারপতি।

এ সময় এজলাস কক্ষে দেড় শতাধিক আইনজীবী, মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতির সফরসঙ্গীরা ও হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে বসে বিচারকার্য পরিচালনা পর্যবেক্ষণ করেন মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ. আহমেদ মুথাসিম।

রোববার (৫ নভেম্বর) সকাল ১১টা ৪২ মিনিটে প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগে বসে তিনি বিচারকার্য পরিচালনা পর্যবেক্ষণ করেন। এ সময় আপিল বিভাগের বেঞ্চে বিচারপতি বোরহান উদ্দিন, বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. আশফাকুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশের সংবিধান দিবস ও সুপ্রিম কোর্টের সুবর্ণজয়ন্তীর সমাপনী অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে মালদ্বীপের প্রধান বিচারপতি উজ. আহমেদ মুথাসিম আদনান বাংলাদেশ সফরে এসেছেন।

এমএইচডি/এসকেডি