মির্জা আব্বাসসহ বিএনপির ৮০০ জনের বিরুদ্ধে পুলিশের মামলা
বিএনপির মহাসমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশকে হত্যার উদ্দেশ্যে ককটেল বিস্ফোরণ এবং পুলিশের অস্ত্র ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসসহ প্রায় আট শতাধিক নেতাকর্মীকে আসামি করে মামলা করেছে পুলিশ।
রোববার (২৯ অক্টোবর) রাজধানীর শাহজাহানপুর থানায় বাদী হয়ে এ মামলা করেন ওই থানার উপ-পরিদর্শক মোস্তাফিজুর রহমান।
বিজ্ঞাপন
মামলায় নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে মির্জা আব্বাসসহ ৫৭ জনকে। অজ্ঞাতপরিচয় আসামি করা হয়েছে আরও ৭০০ থেকে ৮০০ জনকে।
আদালতে শাহজাহানপুর থানার সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক শাহ আলম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
আরও পড়ুন
আরও মামলা হচ্ছে শাহজাহানপুরে
শাহজাহানপুর থানার ওসি হাসিনুর রহমান ঢাকা পোস্টকে বলেন, গতকালের ঘটনায় ইতোমধ্যে একটি পুলিশবাদী মামলা হয়েছে। আরও মামলা হচ্ছে। আহত ভুক্তভোগীদের পক্ষ থেকে মামলা হচ্ছে।
পুলিশবাদী মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাসহ উল্লেখ করা হয়েছে ৫৭ জনের নাম। অজ্ঞাত রয়েছে আরও অনেকে। সবগুলো মামলা এন্ট্রি হওয়ার পর বিস্তারিত বলতে পারব।
উল্লেখ্য, শনিবার (২৮ অক্টোবর) বিএনপি, আওয়ামী লীগ ও জামায়াতে ইসলামী ঢাকায় সমাবেশ করে। দুপুরের পর কাকরাইল এলাকায় বিএনপির সমাবেশে আসা লোকজনের সঙ্গে আওয়ামী লীগের সমাবেশগামী লোকজনের সংঘর্ষ হয়। এসময় প্রধান বিচারপতির বাসভবনে হামলার ঘটনা ঘটে। ছবি তুলতে যাওয়া অনেক সাংবাদিককে তখন মারধর করা হয়। একদল যুবক কাকরাইলের আইডিইবি ভবনে ঢুকে কয়েকটি মাইক্রোবাসে আগুন লাগিয়ে দেয়।
এরপর পুলিশ বড় ধরনের অ্যাকশনে যায়। সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ার শেল ছুড়ে তারা বিএনপি নেতাকর্মীদের সড়ক থেকে সরিয়ে দেওয়া শুরু করে। এক পর্যায়ে ধাওয়া দিয়ে তারা নয়াপল্টনের মহাসমাবেশও পণ্ড করে দেয়। ধাওয়া খেয়ে বিএনপির নেতাকর্মীরা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েন। পরে নয়াপল্টন, পুরানা পল্টন মোড় ও আশপাশের বিভিন্ন স্থানে বিএনপি-পুলিশ-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষ হয়।
এসব ঘটনায় বিএনপির বহু নেতাকর্মীর পাশাপাশি অনেক পুলিশ সদস্য ও সাংবাদিকরা আহত হন। নয়াপল্টন এলাকায় এক পুলিশ সদস্যকে নির্মমভাবে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। একইসময় আরও এক পুলিশ সদস্যকে লাঠি দিয়ে গণপিটিুনি দেওয়া হয়। মাথায় হেলমেট থাকায় তিনি প্রাণে বেঁচে যান।
এসব ঘটনা চলাকালে এবং পরে সন্ধ্যা ও রাত পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন স্থানে ৫টি বাসে আগুন দেওয়া হয়। রাজারবাগ কেন্দ্রীয় পুলিশ হাসপাতালে হামলা চালিয়ে কয়েকটি অ্যাম্বুলেন্স ও গাড়িতে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এসময় পুলিশ হাসপাতালের সামনে এক ব্যক্তি নিহত হন। বিএনপি দাবি করেছে তিনি তাদের কর্মী।
ঢাকার এসব ঘটনার আঁচ লাগে জেলা পর্যায়েও। রাতে সাভার, গাজীপুর, মুন্সীগঞ্জসহ বিভিন্ন জেলায় বাসে আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে।
পুলিশি বাধায় সমাবেশ পণ্ড হওয়ার প্রতিবাদে রোববার সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকে বিএনপি।
এনআর/এমজে