জামিনে থাকা ছাত্রকে গ্রেপ্তার
পটুয়াখালীর দুই পুলিশ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
জামিনে থাকা কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পটুয়াখালীর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হলে তাদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
রোববার বিচারপতি মোস্তফা জামান ইসলাম ও বিচারপতি মো. আমিনুল ইসলামের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন। আদালতে আশরাফুল হাওলাদারের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আলী আহসান মোল্লা। দুই পুলিশ সদস্যের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী আবু রেজা মো. কাইয়ুম খান। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল সারওয়ার হোসেন বাপ্পী।
বিজ্ঞাপন
এর আগে গত ৩০ জুলাই জামিনে থাকা কলেজ শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনায় পটুয়াখালীর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শকের (এএসআই) মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে বিভাগীয় তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার আদেশ দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন : শুধু ক্ষমা করার জন্য বসে নেই : দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে হাইকোর্ট
জমিজমা নিয়ে মারামারির মামলায় হাইকোর্ট থেকে আগাম জামিন নেওয়া মো. আশফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারের ঘটনা নজরে আনলে গত ২০ মে আদালত স্বপ্রণোদিত হয়ে রুলসহ আদেশ দেন। আদেশে পটুয়াখালী সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমানকে তলব করা হয়।
জামিনে থাকার পরও উদ্দেশ্যমূলক গ্রেপ্তার করে দেশের ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করায় সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে কেন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে না, জানতে রুল জারি করেন আদালত।
লিখিত আদেশে আদালত বলেন, মো. আশরাফুল হাওলাদারকে গ্রেপ্তারে পুলিশ সদস্যের আচরণ বা প্রক্রিয়া আইনের পরিপন্থি। একইসঙ্গে তা সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনারও পরিপন্থি। এটা মীমাংসিত বিষয় যে, সংশ্লিষ্ট আইন অনুসরণ না করে নাগরিক অধিকারকে বাধাগ্রস্ত করা যাবে না।
আদালত বলেন, কোনো অভিযুক্তকে গ্রেপ্তারের আগে প্রথমে একজন পুলিশ কর্মকর্তাকে আইনি দিক নিয়ে ভাবতে হয়। এই আসামি ফৌজদারি বিভিন্ন মামলায় উচ্চ আদালত থেকে আগাম জামিনে রয়েছেন। আইনজীবী আসামিকে উচ্চ আদালতের জামিনের প্রত্যয়নও করেছেন। উল্লেখিত মামলায় মনে হচ্ছে এএসআই মিজানুর রহমান সর্বোচ্চ আদালতের নীতিমালা ও আইনের প্রতি অবহেলা প্রদর্শন করেছেন। ফলে ফৌজদারি বিচার ব্যবস্থার কার্যকারিতা বাধাগ্রস্ত হয়েছে। আমরা মনে করি পটুয়াখালী সদর থানার ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও এ এস আই মিজানুর রহমান এ বিষয়ে কারণ ব্যাখ্যা করবেন।
এ আদেশের পর গত ১৮ জুন আদালতে হাজির হয়ে নিঃশর্ত ক্ষমা চান ওসি মো. মনিরুজ্জামান ও সহকারী উপ-পরিদর্শক (এএসআই) মিজানুর রহমান। কিন্তু আদালত আবেদন গ্রহণ না করে ২৩ জুলাই ফের আসতে বলা হয়।
গত ২৩ জুলাই দুই পুলিশ সদস্যের পক্ষে ফের নিঃশর্ত ক্ষমা চান তাদের আইনজীবী আবু রেজা মো. কাইয়ুম খান।
এমএইচডি/এসকেডি