জাতির জনকের ভাস্কর্যের বিরোধিতা ও ঔদ্ধত্যপূর্ণ বক্তব্য দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মাওলানা মামুনুল হক, হেফাজতে ইসলাম বাংলাদেশের আমির মোহাম্মদ জোনায়েদ ওরফে জুনায়েদ বাবুনগরীসহ তিনজনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহ মামলা তদন্ত প্রতিবেদন পেছাল। তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য আগামী ১৯ মে দিন ধার্য করেছেন আদালত।

বৃহস্পতিবার (১ এপ্রিল) মামলা দুইটির তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের তারিখ ছিল। কিন্তু তদন্ত সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) প্রতিবেদন জমা না দেওয়ায় ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সত্যব্রত সিকদার নতুন এ তারিখ ঠিক করে দেন।

এর আগে গত বছরের ৭ ডিসেম্বর একই আদালতে পৃথক দুই বাদী দুটি মামলা দায়ের করেন। বাদী বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট মশিউর মালেকের মামলায় আসামি মাওলানা মামুনুল হক। আরেক মামলার বাদী মুক্তিযুদ্ধ মঞ্চের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আমিনুল ইসলাম বুলবুল। এই মামলার আসামি মামুনুল হক, জুনায়েদ বাবুনগরী ও সৈয়দ ফয়জুল করিম।

মামলার অভিযোগে বলা হয়, গত ১৩ নভেম্বর রাজধানীর তোপখানা রোডের বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) মিলনায়তনে বাংলাদেশ যুব খেলাফত মজলিসের ঢাকা মহানগর শাখার সমাবেশে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণের বিরোধিতা করে মামুনুল হক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য গড়তে দেওয়া হবে না। প্রয়োজনে লাশের পর লাশ পড়বে। আবার শাপলা চত্বর হবে।’

একইদিন আসামি সৈয়দ ফয়জুল করীম ধোলাইখালের গেন্ডারিয়া নামক স্থানে তার নসিয়ত শুনতে আসা সাধারণ মুসলমানদের হাত উঁচু করে শপথ পড়িয়ে নেন যে, ‘আন্দোলন করব, সংগ্রাম করব, জেহাদ করব। রক্ত দিতে চাই না, দেওয়া শুরু করলে বন্ধ করব না। রাশিয়ার লেলিনের বাহাত্তর ফুট মূর্তি যদি ক্রেন দিয়ে তুলে সাগরে নিক্ষেপ করতে পারে তাহলে আমি মনে করি শেখ সাহেবের এই মূর্তি আজ হোক, কাল হোক খুলে বুড়িগঙ্গায় নিক্ষেপ করবে।’

জুনায়েদ বাবুনগরী হাটহাজারীতে বলেন, ‘মদিনা সনদে যদি দেশ চলে তাহলে কোনো ভাস্কর্য থাকতে পারে না।’

গত ৪ ডিসেম্বর মধ্যরাতে কুষ্টিয়া শহরের পাঁচ রাস্তার মোড়ে পৌরসভার উদ্যোগে প্রায় ৩০ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মাণাধীন বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য ভাঙচুর করে দুর্বৃত্তরা। বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য নির্মাণ নিয়ে দেশব্যাপী ইসলামপন্থী বিভিন্ন সংগঠনের প্রতিবাদের মধ্যেই কুষ্টিয়ায় এ ঘটনা ঘটে।

এরপর ওই ঘটনায় চার মাদরাসা ছাত্রকে আটক করা হয়েছে বলে ৬ ডিসেম্বর জানিয়েছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। এসময় তিনি বলেন, এ ঘটনায় উস্কানিদাতাদের কাউকে ছাড় দেওয়া হবে না।

টিএইচ/এমএইচএস