৬৬ শিক্ষককে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দিতে নির্দেশ
৬৬ জন এমপিওভুক্ত শিক্ষককে বেসরকারি শিক্ষক নিবন্ধন ও প্রত্যয়ন কর্তৃপক্ষের (এনটিআরসিএ) ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
মঙ্গলবার (২৪ জানুয়ারি) দেশের বিভিন্ন জেলার ৬৬ প্রার্থীর দায়ের করা এক রিট আবেদনের প্রাথমিক শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলীর হাইকোর্ট বেঞ্চ এ আদেশ দেন।
বিজ্ঞাপন
আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার এবিএম আব্দুল্লাহ মাহমুদ বাশার।
অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া বলেন, ২০২২ সালের ১৪ নভেম্বর এনটিআরসিএ-এর ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ এর শর্ত নং-১২ এবং মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগ, শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের ১৪.১১.২০২২ তারিখের পরিপত্র অনুযায়ী রিটকারীদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদনের সুযোগ বাতিল করা কেন অবৈধ হবে না এবং জনবল কাঠামো নীতিমালা অনুযায়ী রিটকারীদের বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি-২০২২ এ আবেদন করার সুযোগ দেওয়া হবে না, তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেছিলেন হাইকোর্ট। আজ রিটকারীরা তাদের আবেদনের সুযোগ দেওয়ার জন্য নির্দেশনা চেয়ে একটি আবেদন দাখিল করলে হাইকোর্ট এনটিআরসির ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
আইনজীবী আরও বলেন, ২০১৫ সালের ৩০ ডিসেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় ‘বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে শিক্ষক নিয়োগে অনুসরণীয় পদ্ধতি’ বিষয়ে একটি পরিপত্র জারি করে। ওই পরিপত্রের ৭.০ নং ক্রমিকে উল্লেখ আছে যে, ‘কর্মরত কোনো শিক্ষক যদি অন্য কোনও প্রতিষ্ঠানে নিয়োগ পেতে আবেদন করেন তবে তাকেও অপরাপর আবেদনকারীদের একইরূপ মেধাক্রমের ভিত্তিতে নিয়োগের জন্য বিবেচনা করা হবে। বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (মাদ্রাসা) জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ধারা ১২ এবং বেসরকারি কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জনবল কাঠামো ও এমপিও নীতিমালা-২০১৮ (২৩ নভেম্বর ২০২০ পর্যন্ত সংশোধিত)-এর ধারা ২৩.১ এ উল্লেখ্য আছে যে, ‘এমপিওভুক্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদনক্রমে এমপিওভুক্ত প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে সমপদে বা উচ্চতর পদে নিয়োগের জন্য আবেদন করতে পারবে। পূর্বের প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্র ও দায়মুক্তি প্রাপ্তি সাপেক্ষে নতুন প্রতিষ্ঠানে এমপিও প্রাপ্য হবে’। অর্থাৎ কর্মরত ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ আছে। কিন্তু গত বছরের ১৪ নভেম্বর শিক্ষা মন্ত্রণালয় অপর একটি পরিপত্র জারি করে। ৩০ ডিসেম্বর ২০১৫ সালের পরিপত্রের ৭.০ নম্বর ক্রমিক সাময়িকভাবে স্থগিত ঘোষণা করে এবং পরে বিগত ২১ ডিসেম্বর ২০২২ সালের এনটিআরসিএ ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। যার ১২ নম্বর শর্তে এই ১৪ নভেম্বরের তারিখের পরিপত্রের বিষয় উল্লেখ করে ইনডেক্সধারী শিক্ষকদের অন্য প্রতিষ্ঠানে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে আবেদন করার সুযোগ বাতিল করে। ওই ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তি এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পরিপত্রের ওপর সংক্ষুব্ধ হয়ে ইনডেক্সধারী শিক্ষকরা রিট পিটিশন দায়ের করেন। রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ৬৬ জন রিট পিটিশনারকে এনটিআরসিএর ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে আবেদনের সুযোগ প্রদানের নির্দেশ দিয়েছেন।
রিটকারীদের আইনজীবী মোহাম্মদ ছিদ্দিক উল্লাহ মিয়া আরও বলেন, আশা করি আজকের আদেশের আলোকে ৪র্থ গণবিজ্ঞপ্তিতে বিভাগীয় প্রার্থী হিসেবে রিটকারী শিক্ষকদের আবেদন করার জন্য বিবাদীরা দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা করবেন।
এর আগে ৬৬ জন হাইকোর্টে রিট করেন। মফিজুর রহমান, পপি আক্তার, আব্দুল বারেক, সোহেল রানা, নেয়ামত শেখ, আনিসুর রহমান, আলগীর হোসেনসহ বিভিন্ন জেলার মোট ৬৬ জন ইনডেক্সধারী শিক্ষক এ রিট দায়ের করেন।
এমএইচডি/এসএম