মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় ময়মনসিংহের ত্রিশালের ৬ জনের মৃত্যুদণ্ডের রায় দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল। মৃত্যুদণ্ড পাওয়া আসামিরা হলেন- মোখলেছুর রহমান মুকুল, শামসুল হক ফকির, নুরুল হক ফকির, সুলতান মাহমুদ ফকির, নাকিব হোসেন আদিল সরকার ও সাইদুর রহমান রতন। তারা সবাই পলাতক।

সোমবার (২৩ জানুয়ারি) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের চেয়ারম্যান মো. শাহিনুর ইসলামের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ এ রায় ঘোষণা করেন। ট্রাইব্যুনালের অপর দুই সদস্য হলেন- বিচারপতি মো. আবু আহমেদ জমাদার ও বিচারপতি কেএম হাফিজুল আলম। এটি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের ৫০তম রায়।

রায় ঘোষণার সময় ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সিমন ও তাপস কান্তি বল। আসামিদের পক্ষে ছিলেন গাজী এমএইচ তামিম।

রায়ে আসামিদের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগের মধ্যে প্রথম অভিযোগে ৬ জনকে ফাঁসি ঘোষণা করা হয়। এরপর ৩ ও ৪ নম্বর অভিযোগেও ফাঁসি দেওয়া হয়। এছাড়া দুই নম্বর অভিযোগে চার আসামিকে ৭ বছর করে কারাদণ্ড এবং ৫ ও ৬ নম্বর অভিযোগে ৭ বছর করে কারাদণ্ড ঘোষণা করেন ট্রাইব্যুনাল।

রায়ের পর প্রসিকিউটর সুলতান মাহমুদ সীমন সাংবাদিকদের বলেন, হত্যা, নির্যাতন, আটক ও অপহরণের অভিযোগসহ আসামিদের বিরুদ্ধে ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। ছয়টি অভিযোগই প্রমাণিত হয়েছে। মৃত্যুদণ্ডসহ বিভিন্ন মেয়াদে সাজা ঘোষণা করেছেন আদালত।

 গতকাল (রোববার) এ মামলার রায় ঘোষণার জন্য আজকের দিন ধার্য করা হয়। এর আগে, গত বছরের ৫ ডিসেম্বর এই মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষে মামলাটি রায় ঘোষণার জন্য অপেক্ষমান রাখা হয়।

আরও পড়ুন >>> একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি : জয়যাত্রার জয়োল্লাস

মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ১৯৭১ সালের জুন-জুলাইয়ে ত্রিশালের আহমেদাবাদে একটি বিদ্যালয়ে ক্যাম্প স্থাপন করে শান্তি ও রাজাকার বাহিনী। ওই সময় কাকচর গ্রামের ইউনুছ আলী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের নদী পারাপার করতেন। এ কারণে ইউনুছ আলীকে ধরে ক্যাম্পে নিয়ে যান ২০-২৫ জন। নির্যাতনের পর ৭১ সালের ১৫ আগস্ট সকালে তাকে গুলি করে হত্যা করা হয়। এছাড়া ওই রাজাকার বাহিনীর সদস্যরা মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে এলাকায় লুটপাট ও ধর্ষণের মতো অপরাধ করে।

এসব অভিযোগে পরে আসামিদের বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিল করা হয়। এ অভিযোগ আমলে নিয়ে ফরমাল চার্জগঠন করে বিচার কাজ শুরু করেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল।

২০১৫ সালের ২৮ ডিসেম্বর ময়মনসিংহের বিচারিক আদালতে মামলাটি করেন মুক্তিযুদ্ধে শহীদ ইউনুছ আলীর ছেলে রুহুল আমিন। পরে ওইদিনই দুপুরে বিচারক আবেদা সুলতানা মামলাটি আমলে নিয়ে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে পাঠানোর আদেশ দেন।

এমএইচডি/ওএফ