চট্টগ্রামের হাটহাজারীর একটি মাদরাসায় আট বছর বয়সী এক ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় ওই শিক্ষক মাওলানা ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে কী পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে, তা জানাতে নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। হাটহাজারী থানার নির্বাহী অফিসার, ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টদের তা জানাতে বলা হয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১১ মার্চ) বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি শাহেদ নুরউদ্দিনের হাইকোর্ট বেঞ্চ স্ব-প্রণোদিত হয়ে এই আদেশ দেন। এছাড়াও ইয়াহিয়ার বিরুদ্ধে হওয়া মামলা কোন পক্ষের চাপের কারণে প্রত্যাহার করেছে কিনা তাও জানাতে বলা হয়েছে।

আট বছর বয়সী ছাত্রকে বেধড়ক মারধরের ঘটনায় পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদন আদালতের নজরে আনেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল আবদুল্লাহ আল মাহমুদ বাশার।

উল্লেখ্য, শিশু শিক্ষার্থীকে মারধরের ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষক হাফেজ ইয়াহিয়াকে বুধবার (১০ মার্চ) বিকেল তিনটার দিকে আটক করেছে পুলিশ। তাকে রাঙ্গুনিয়ার সাফরভাটা এলাকা থেকে আটক করা হয়েছে।

এরআগে, মাদরাসার শিক্ষার্থী ইয়াসিন ফরহাদকে মারধরের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। মারধরের ঘটনার পরে হাটহাজারী উপজেলার ইউএনও রুহুল আমিনের নেতৃত্ব মঙ্গলবার (৯ মার্চ) দিবাগত রাত ২টার দিকে মাদরাসা থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়ে। 

ইউএনও রুহুল আমিন ঢাকা পোস্টকে বলেন, ওই শিক্ষক ইয়াহিয়াকে মাদরাসা থেকে বরখাস্ত করা হয়েছে। নির্যাতনের শিকার শিশুটির বাবা-মা অভিযুক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা না নিতে চাওয়ায় তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ প্রশাসন ও আমার পক্ষ থেকে মামলার খরচ চালানোর কথা বললেও তারা তাতে রাজি হয়নি। এমনকি তারা একটি আবেদনে শিক্ষকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়ার কথা বলেন। 

জানা গেছে, মঙ্গলবার ইয়ামিনের মা-বাবা তার সঙ্গে দেখা করতে মাদরাসায় যায়। বিকেল ৫টার দিকে ফিরে আসার সময় সেও পেছন পেছন চলে আসে। এরপর শিক্ষক ইয়াহিয়া সেখান থেকে ইয়াসিনকে ধরে এনে পেটাতে শুরু করেন। এমনকি মাদরাসার ভেতরেও শিশুটির ওপর নির্যাতন চালান।

এদিকে ভাইরাল হওয়া ৩২ সেকেন্ডের ভিডিওতে দেখা গেছে, রাস্তা থেকে শিশুটিকে ধরে নিয়ে যান ইয়াহিয়া। পরে মাদরাসার ভেতরে নিয়েও পেটাতে থাকেন। শিশুটির চিৎকারেও তার মন গলেনি। ইয়াহিয়া পেটাতে পেটাতে বলতে থাকেন, আর বের হবি! 

হাফেজ ইয়াহিয়া চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার সাফরভাটা গ্রামের মোহাম্মদ ইউনুসের ছেলে। তার শিশু নির্যাতনের ভিডিও ভাইরালের পর নিন্দার ঝড় বয়ে যাচ্ছে।

এমএইচডি/ওএফ